চাষী নজরুল ইসলাম: বাংলা চলচ্চিত্রের কালজয়ী নির্মাতা
বিনোদন: ঢাকাই সিনেমায় যে’কজন নির্মাতা গুণী এবং সফল হিসেবে বিবেচিত, তাদের মধ্যে অন্যতম চাষী নজরুল ইসলাম। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে তিনি এমন কিছু সিনেমা নির্মাণ করেছেন, যেগুলো তাকে দিয়েছে কালোত্তীর্ণের সুযোগ। তাই ঢালিউডের ইতিহাস লিখতে চাইলে একটা অনিন্দ্য অংশজুড়ে থাকবেন চাষী নজরুল ইসলাম।
আজ ২৩ অক্টোবর, চাষী নজরুল ইসলামের জন্মদিন। শুভ জন্মদিন গুণী নির্মাতা। ১৯৪১ সালের এই দিনে তিনি বিক্রমপুরের শ্রীনগরে জন্মগ্রহণ করেন। তার নামের রয়েছে বিশেষ ইতিহাস। নামটি রেখেছিলেন বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম নেতা শেরেবাংলা এ. কে. ফজলুল হক। চাষী নজরুল ইসলামের মামা চাষী ইমাম উদ্দিন রাজনীতি করতেন শেরেবাংলার সঙ্গে। সেই সুবাদে তিনি চাষীর নাম রাখেন। কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও মামা চাষী ইমাম উদ্দিনের নামের সংযোজনে চাষী নজরুল ইসলাম নামটি রাখেন বাংলার বাঘ।
চলচ্চিত্র দুনিয়ায় চাষী নজরুল ইসলামের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৬১ সালে। নির্মাতা ফতেহ লোহানীর সহকারী হিসেবে ‘আছিয়া’ সিনেমায় কাজ করেন চাষী। বছর দশেক সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার পর পূর্ণাঙ্গ পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি।
চাষীর নির্মিত প্রথম সিনেমা ‘ওরা ১১ জন’। ১৯৭২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমা বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে অন্যতম সেরা সিনেমা হিসেবে বিবেচিত হয় এটি। এরপর একে একে নির্মাণ করেন ‘সংগ্রাম’, ‘ভালো মানুষ’, ‘বাজিমাত’, ‘দেবদাস’, ‘শুভদা’, ‘মিয়া ভাই’, ‘বেহুলা লক্ষ্মীন্দর’, ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’, ‘হাছন রাজা’, ‘মেঘের পরে মেঘ’, ‘সুভা’-এর মতো দর্শকনন্দিত ও প্রশংসিত সিনেমাগুলো।
নির্মাতা হিসেবে চাষী নজরুল ইসলাম দুইবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ১৯৮৬ সালে ‘শুভদা’ ও ১৯৯৭ সালে ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’ সিনেমা দুটি তাকে এই সম্মাননা এনে দেয়। এছাড়া তিনি ২০০৪ সালে ভুষিত হন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদকে।
২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি ঢালিউডে একটা অপূরণীয় অভাব তৈরি করে চাষী নজরুল ইসলাম চলে যান ওপারে। চলে গিয়েও সিনে জগতে সবসময় তিনি স্মরণীয়।