জুলাই আগষ্টের শহিদদের আবেগ কাজে লাগিয়ে মামলা হামলা করে নর্দান বিশ্ববিদ্যাল দখলের চেষ্টা!

নিজস্ব প্রতিবেদক
দীর্ঘ ১৬ বছরে পরে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারর পতন হয় ছাত্র জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে। এ আন্দোলনে জীবন দিতে হয় হাজারের বেশী ছাত্র জনতাকে। রক্তের বিনিময়ে নতুন বাংলাদেশ পায় দেশের জনগণ। ফ্যাসিস্ট পতনের পর রাজধানীসহ সারাদেশে প্রায় আড়াই হাজার হত্যা মামলা দায়ের করে নিহতের স্বজনেরা। এর মধ্যে বেশ কিছু মামলার নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। তবে, এরই মধ্যে জুলাই আগষ্টের শহিদদের আবেগ কাজে লাগিয়ে মামলা হামলা করে নর্দান বিশ্ববিদ্যাল দখলের চেষ্টা করছে একটি চক্রটি। যেটা বিভিন্ন মহলে আলোচনার সমালোচনার জন্ম দিচ্ছে।
৩০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশান থানায় ছেলে হত্যার ঘটনায় তার বাবা আবু জাফর বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। একই দিনে পল্টন থানায় দায়ের হয় আরও একটি হত্যা মামলা। দুই মামলাতেই আসামী শতাধিক। তবে একই দিনে হওয়া এই দুটি মামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর সাবেক ডিরেক্টর ও ব্যবসায়ী ইউসূফ আব্দুল্লাহকে আসামী করা হয় হত্যাকারী ও অর্থদাতা হিসেবে। শুধু তাই না একমাসের মাথায় পল্টনের আরেকটি মামলায় সে ও তার ছেলে সাদ আল জাবির আব্দুল্লাহ মেয়েদেরও আওয়ামীলীগ নেতা বানিয়ে মামালায় জড়ানো হয়। আসামী করা হয় যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলারও। শুধু তাই না হত্যা মামলার আসামী করা হয় পরিবার ও তার অফিসের অনেককে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে একজন ব্যক্তি একই দিনে দুই জায়গার হত্যা মামলার আসামী হয় কিভাবে। এসব মামলায় অভিযুক্ত আসামীরা বলছেন উদ্দেশ্যমূলক ভাবে অর্থ ও সম্পদ দখলের আসায় দেয়া হয়েছে এসব মামলা। গুলশান থানায় করা হত্যা মামলার বাদি আবু জাফর। ঢালাওভাবে আসামি করার বিষয়টি জানতে চাইলে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
গুলশানের এই মামলা ছাড়াও অন্য মামলাগুলোর কাগজ ধরন একই রকম। আসামী ইউসূফ আব্দুল্লাহ তার পরিবার ও বিভিন্ন ব্যবসায়ী। তাহলে কেনো জড়ানো হচ্ছে ব্যবস্যায়ী ও শিক্ষকদের। আমরা খোজার চেষ্টা করেছি এর উত্তর।
৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের ২ দিনের মাথায় হামলা হয় নর্দান ইউনিভারসিটিতে। বোরহান উদ্দিন ও লুৎফর রহমান সানি নামের দুজন নেতৃত্ব দেয় এই হামলায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে জিম্মি করে বিশ্ববিদ্যালয় দখরের চেষ্টা তারা। এসব ছাত্ররা প্রতিহত করে পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। গ্রেপ্তার করে বোরহান ও সানিকে।
এর কিছুদিনের মাথায় বনানীর প্রাসাধ ট্রেড সেন্টারে নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসে মব ভায়োলেন্সের নামে হামলা চালায় দূবৃত্তরা। ভাংচুর চালানো হয় অফিস লুট করা হয় টাকা ও ল্যাপটপ।বিশ্ববিদ্যায় কতৃপক্ষ জানায় এসব হামলা চালিয়ে বোরহান ও সানি বিশ্ববিদ্যালয় দখল করার চেষ্টা করছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যানসহ ট্রাষ্টি বোডের প্রায় সবার নামে জুলাই আগষ্টের হত্যা মামলায় আসামী করেছে তারা।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কে এই বোরহান ও সানী?
বোরহান ও সানি মূলত নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাষ্টি সদস্য ছিলেন। ২০০৯ সাল পর্যন্ত সিমাহিন দূর্ণিতির দায়ে ২০১১ সালে তারা পদত্যাগ করেন। এসময় তাদের দুজনকেই কোটি টাকা দেয় নতুন বোর্ডের সদস্যরা। বোরহান ও সানি নিজ ইচ্ছায় সকল কাগজ সাক্ষর করেন। পরে ২০১২ সালে নতুন বোর্ড গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল দেনা পরিষদ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন জায়গা কেনা হয় শতকোটি টাকা খরচ করে তৈরী করা হয় ক্যাম্পাস। ২০১২ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ঠিকই ছিলো সব।
নর্দান বিশ্ববিদ্যাল দখলের চেষ্টা কেনো?
গতবছরের ৫ আগষ্টে সরকার পতনের পর থেকে এখন অবৈধ ভাবে মামলা দিয়ে ও হামলা চালিয়ে দখলের চেষ্টা করছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। শুধু হামলা ও মামলা করেই ক্ষান্ত হয়নি এই চক্রটি। নর্দান বিশ্বদিলয়ের প্রতিষ্ঠাতা ৮০ উর্ধ বয়সী প্রফেস্যার সামসুল হকের থেকে বিশ্ববিদ্যালয় দখলের জাল দলিল সই করাতে চেয়েছিলো এই বোরহান ও সানি। বনানীর বাসায় গিয়ে সাক্ষর নিতে চাইলে প্রফেস্যার সামসুল হকের মেয়েরা তাতে বাধা দেয়। এ সক্রান্ত একটি অভিযোগও করা হয় বনানী থানায়। এঘটনাও পুলিশ দুজনকে খুজছে।
জানা যায়, যাদের বিরুদ্ধে দখল ও মামলা দেয়ার এতো অভিযোগ কথা হয় তাদের সাথে কথা বললে হামলা মামলার ব্যপারে করা কোন প্রশ্নের সতউত্তর দিতে পারেনি বোরহান ও সানির লোকজন। জুলাই আগষ্টের আন্দোলন যে উদ্দেশ্যে হয়েছিলো আর যারা এই আন্দোলনে শহিদ হয়েছে। তাদের মামলাকে পুজি করে দখল বানিজ্য ও চাঁদাবাজি এখনই বন্ধ না করা হলে প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে শহিদের আক্তত্যাগ বলে মন্তব্য করছেন দেশের সচেতন মহল।
ভোরের পাতা/টিটি