প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ১২১ দিনে কার্যালয় থেকে মানুষের সুখ-দুঃখের অংশীদার কাউন্সিলর রতন

সময়: 12:12 pm - July 13, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 372 বার
করোনা সংকটে ১২১ দিনে নিজ কার্যালয় থেকে এলাকাবাসীর সুখ-দুঃখের অংশীদার হচ্ছেন কাউন্সিলর রতন

ভোরের কাগজ: ফরিদ উদ্দিন আহমেদ রতন মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে নিজ কার্যালয়ে দিনরাত অবস্থান করে এ এলাকার সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। ফরিদ উদ্দিন আহমেদ রতন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ২০ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।

তিনি পরিবার-পরিজন ছেড়ে ১২১ তম দিনে নিজ কাউন্সিলর কার্যালয় থেকে এলাকাবাসীর সুখ,দুঃখের অংশীদার হচ্ছেন কাউন্সিলর রতন।

এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, করোনা ভাইরাস সংক্রমন রোধে শুরু থেকে নিজ কার্যালয়ে অবস্থান করে জনসেবায় নিয়োজিত রয়েছেন।

কাউন্সিলর রতনের ভাষ্য, আমি যদি বাসায় থাকতাম তাহলে সাধারণ মানুষ আমাকে পেত না, পরিবার-পরিজন ছেড়ে ২৪ ঘন্টা কার্যালয়ে থেকে সাধারণ মানুষের সুবিধা অসুবিধা মাথায় রেখে কাজ করে যাচ্ছি। “আমি জনপ্রতিনিধি মানুষের সেবা করা আমার নৈতিক দায়িত্ব”।

সম্প্রতি করোনা ও সিটি কর্পোরেশন সার্বিক বিষয় নিয়ে এক আলোচনায় তিনি এসব তথ্য জানান।

বাসায় না গিয়ে দীর্ঘ এই সময় কার্যালয়ে অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর রতন বলেন, আমি যদি বাসায় থাকতাম এইমানুষগুলো আমাকে পেত না। কারণ আমি যে বাসায় থাকি সেখানে অনেকগুলো পরিবার থাকে। কোনো পরিবারেই আমাকে সেখানে এলাউ করত না। বিশেষ করে আমার ৩ কন্যা সন্তান ও আমার স্ত্রী আছে।

তিনি বলেন, প্রতিদিন আমার শতশত মানুষের সাথে মিশতে হয়। মহান আল্লাহ আমাকে মাফ করুন আমার যদি কিছু হয় তাহলে আমি চাই না আমার জন্য আমার পরিবার কোনো সংকটে পড়ুক। দ্বিতীয় হচ্ছে আমি যদি আমার পরিবারকে সময় দেই তাহলে আমি এখন পর্যন্ত যে ৬ হাজারের ও অধিক পরিবারের কাছে যেতে পেরেছি এটা আমার দ্বারা সম্ভব হত না। আমার লক্ষ্য মানুষের সেবা করা। আমার রাজনীতি মানুষের জন্য। আমি একজন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। আমি নেত্রীর একজন সিনিয়র কর্মী হিসেবে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করছি।

করোনা ভাইরাসের এই মহাসংকটের দিনে নিজ কার্যালয়ে অবস্থান করে জনগণের সেবা করে যাচ্ছেন তাছাড়া এখানে থাকলে পরিবার থেকে কোনো আপত্তি করা হয় কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ২০ নং ওয়ার্ডের এই কাউন্সিলর বলেন, আমার ফ্যামিলি থেকে কোনো আপত্তি করা হয়নি।

তিনি বলেন, যেহেতু এটি আমার নৈতিক দায়িত্ব। জনগণের ভোটাধিকার আমার পক্ষে সুতরাং মানুষের জন্য আমার কাজ করতে হবে। নৈতিক দায়িত্ব থেকেই আমার পরিবার আমাকে সমর্থন দিয়েছে এবং আমার জন্য নিয়মিত খাবার পাঠিয়ে দেয়। এজন্য আমি আমার পরিবারের কাছেও কৃতজ্ঞ।

রতন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তোমরা ভোটের সময় যে ভাবে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ভেঅট চেয়েছো ঠিক সেই ভাবে সাধারণ মানুষের ধারে ধারে গিয়ে তাদের সুবিধা অসুবিধার খোজ খবর নাও। আমি প্রধানমন্ত্রীর সেই কথা পালন করার চেষ্টা করছি।

তিনি বলেন, এর বাহিরেও আমাদের নবনির্বাচিত মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস সাহেবও আমাদের ওয়ার্ডে খাদ্যসামগ্রী পাঠিয়েছেন। এটাও আমরা দিয়েছি। সেগুনবাগিচা সোসাইটি ১০০ পরিবারকে দিয়েছে। এটাও আমরা দিয়েছি। ব্যক্তিগত ভাবে একজন কাউন্সিলর হিসেবে নয়, একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার সামর্থ্য অনুযায়ী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ মানার জন্য কাজ করছি।

তিনি বলেন, “নেত্রী বলেছেন”, ভোট যেভাবে তোমরা চেয়েছো, ঠিক সেভাবে প্রত্যেকটা ঘরে ঘরে গিয়ে খাবার পৌঁছে দেও। আমি চেষ্টা করেছি আমার প্রাণপ্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশকে বাস্তবায়ন করার জন্য। আমার নিজস্ব অর্থায়নের মাধ্যমে প্রত্যেকের ঘরে ঘরে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছি। এটাই হচ্ছে আমার সফলতা। নেত্রীর নির্দেশ পালন করতে পেরেছি এটায় আমি সার্থকতা। এজন্য আমি নিজেকে ধন্য মনে করি।

করোনাকালীন কার্যক্রম নিয়ে তিনি বলেন, আমার ওয়ার্ডে যারা ছিন্নমূল, হতদরিদ্র, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী যারা আমার এখানে বসবাস করে তাদের প্রত্যেকের ঘরে ঘরে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছি। পাশাপাশি সরকারি যেসব সাহায্য এসেছে বিশেষ করে ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে চাল, খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে ওএমএস চাল এগুলো আমরা তাদেরকে পৌঁছে দিচ্ছি।

এক প্রশ্নের জবাবে ২০ নং ওয়াডের্র এই জনপ্রিয় কাউন্সিলর বলেন, আমি একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে যদি মানুষের পাশে না থাকি তাহলে আমি মানুষের কাছে বেইমান হিসেবে পরিচিত হবো।

 

করোনা সংকটে ১২১ দিনে নিজ কার্যালয় থেকে এলাকাবাসীর সুখ-দুঃখের অংশীদার হচ্ছেন কাউন্সিলর রতন

করোনার সময় কর্মহীনদের জন্য কার্যক্রমের বিষয়ে কাউন্সিলর রতন বলেন, কর্মহীনদের জন্য সিটি করপোরশেন থেকে যা বরাদ্ধ আসছে তা সবাইকে দিয়েছি এবং দিয়ে যাচ্ছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি শক্ত হাতে দেশের এই দুর্যোগ মহামারী সামাল দিয়ে যাচ্ছেন। সারাবিশ্বের সংকটময় মুহূর্তে আমাদের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা হিসেবে যে দায়িত্ব তিনি পালন করছেন আমি ওনার কাছে চির কৃতজ্ঞ। সারা বাঙ্গালী জাতি ওনার কাছে কৃতজ্ঞ।

তিনি বলেন, এই দুযোর্গে কেউ না খেয়ে মারা যায়নি। আমাদের নেত্রী দলীয় নেতাকর্মী ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রত্যেকের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এবং সেই নির্দেশ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রতিটি নেতাকর্মী পালন করে যাচ্ছে। আমরা জনপ্রতিনিধিরাও কাজ করে যাচ্ছি।

নতুন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের কাছে প্রত্যাশার বিষয়ে কাউন্সিলর রতন বলেন, নতুন মেয়রের কাছে প্রত্যাশা আমাদের অনেক বেশি। কারণ তিনি দীর্ঘ ১১ বছর জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন।

তিনি বলেন, ওনি ৪টি থানা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। সেখানে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যারা ছিলো এবং যেহেতু তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত সংসদ সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এবং সকল সহযোগী সংগঠন এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি প্রত্যেকেই ওনার কর্মকান্ডে দলীয় নেতা থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা কর্মী পযর্ন্ত সকলেই সন্তুষ্ট।

রতন বলেন, আমি বিশ্বাস করি তখন যিনি ৬ জন কাউন্সিলর যারা দায়িত্ব পালন করেছিলেন সেই এলাকার সবাইকে খুশি রাখতে পেরেছিলেন। এখন ২৫টি থানা। ১০০জন কাউন্সিলরকে তিনি অবশ্যই খুশি রাখতে পারবেন। যিনি ৪টি থানার নেতাকর্মীকে খুশি রাখতে পেরেছেন। সেখানে তিনি ২৫টি থানার নেতাকর্মীকেও খুশি রাখতে পারবেন।

তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে শতভাগ বিশ্বাস করি মেয়র সাহেবের কাছে কাউন্সিলররা বা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা প্রত্যেকেই প্রত্যেকের সম্মান পাবেন। ঢাকা শহরে ওনার ৪টি থানায় কোনো কোন্দল ছিলো না। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন ইনশআল্লাহ মাননীয় মেয়রের নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে।

করোনা ভাইরাস মহামারির সংকটময় মূহুর্ত্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার তহবিল, ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপসের তহবিল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামীলীগ, এলাকাবাসী এবং নিজ উদ্যোগে সর্বমোট ৬০০০ পরিবারকে সহযোগিতা করতে পেরে স্বস্তি বোধ করছেন এই জনপ্রতিনিধি।

এলাকাবাসীর মতে, এইভাবে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার জন্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ রতনকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন অনেকেই।

 

ভোরের কাগজ/ভিআরথী

এই বিভাগের আরও খবর