বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্নই কাল হলো ঢাবি শিক্ষার্থী সুমাইয়ার

সময়: 3:22 pm - June 23, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 62 বার
বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্নই কাল হলো ঢাবি শিক্ষার্থী সুমাইয়ার

নাটোর: সদরের হরিশপুর এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী সুমাইয়া বেগমকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সুমাইয়া নাটোর সদরের হরিশপুর বাগানবাড়ি এলাকার মোস্তাক হোসাইনের স্ত্রী। এ ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

জানা যায়, সোমবার সকালে স্বামীর বাড়ি থেকে মৃত অবস্থায় নাটোর সদর হাসপাতালে আনা হয় সুমাইয়াকে। এরপর সুমাইয়া গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করা হয় মোস্তাকের পরিবারের পক্ষ থেকে।

সুমাইয়ার চাচা মোহাম্মদ আলী জানান, সোমবার সকালে সুমাইয়ার শ্বশুর জাকির হোসেন ফোন করে সুমাইয়ার অসুস্থতার কথা বলেন। তখন সুমাইয়ার বাবার লোকজন হাসপাতালে গিয়ে তার মরদেহ দেখতে পান। এ সময় তার স্বামী মোস্তাক বা শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে সেখানে দেখা যায়নি। এ সময় তাদের সন্দেহ হলে তারা ঘটনাটি সদর থানায় জানায়। পরে পুলিশ এসে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।

মোহাম্মদ আলী আরো জানান, ২০১৯ সালের ১৪ এপ্রিল মোস্তাক হোসাইনের সঙ্গে সুমাইয়ার বিয়ে হয়। সুমাইয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে অনার্স এবং মাস্টার্সে ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। সে ঢাকায় বিসিএসের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন এতে বাদ সাধে। তারা সুমাইয়ার পড়াশোনা বন্ধ করে দিতে চায় এবং বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেয়। কিন্তু সুমাইয়া স্বপ্ন সে বিসিএস ক্যাডার হবে। তাই সে থেমে না থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চায়।

সুমাইয়ার মা নুজহাত বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করার মত মেয়ে নয়। জীবনে প্রথম ছাড়া কখনো দ্বিতীয় হয়নি। জেডিসি, দাখিল, আলিম, অনার্স ও মাস্টার্স পরীক্ষায় সুমাইয়া প্রথম বিভাগ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। সেই মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রথমে এ মৃত্যুর ঘটনায় সুমাইয়ার বাবার বাড়ির কেউ অভিযোগ না করায় পুলিশ ইউডি মামলা করে। পরে সোমবার রাতে সুমাইয়ার মা নুজহাত হত্যা মামলা দায়ের করেন। হরিশপুরে মোস্তাকের বাড়িতে গেলে কাউকে পাওয়া যায়নি। সুমাইয়ার দেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, প্রথমে এই ঘটনায় কেউ অভিযোগ না দেয়ায় পুলিশের পক্ষ থেকে ইউডি মামলা করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে সুমাইয়ার পরিবার থেকে হত্যার অভিযোগ আসায় রাতে হত্যা মামলা নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি চার নম্বর অভিযুক্ত জাকিয়া ইসলাম যুথি ও তিন নম্বর অভিযুক্ত সৈয়দা মালেকা আটক করা হয়েছে। সুমাইয়ার স্বামী মোস্তাক হোসেন এবং মোস্তাকের বাবা জাকির হোসেন পলাকত রয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর