ব্রিকস সম্মেলন এজেন্ডা বাস্তবায়নই এবারের আয়োজনের মূল লক্ষ্য
ঢাকা: এজেন্ডা বাস্তবায়নকে গুরুত্ব দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় শুরু হয়েছে ১৫তম ব্রিকস সম্মেলন। এবারের আয়োজনে সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হবে, উন্নয়শীল দেশগুলোতে জোটটির রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্র বৃদ্ধি করা। সেক্ষেত্রে বাড়ানো হতে পারে ব্রিকসের পরিধিও।যার মূল লক্ষ্য থাকবে, ব্রিকসের পশ্চিমা বিরোধী অবস্থানকে আরও সংহত করা। খবর আলজাজিরার।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) বিজনেস ফোরামের সম্মেলনের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় ব্রিকসের এবারের শীর্ষ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা, যা চলবে আগামী ২৪ তারিখ পর্যন্ত। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার এ জোটের ১৫তম সম্মেলন ঘিরে গোটা বিশ্বের নজর এখন জোহানেসবার্গে।
করোনা মহামারির পর প্রথমবারের মতো এক মঞ্চে স্বশরীরে হাজির হচ্ছেন অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসের নেতারা। দক্ষিণ আফ্রিকায় ২২ থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত চলবে এ সম্মেলন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এবারের আয়োজনে থাকবে নানা চমক।
আন্তর্জাতিক আদালতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় স্বশরীরে এবারের সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন না রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার পক্ষ থেকে প্রতিনিধি পাঠানো হলেও সম্মেলনের মূল আয়োজনে অংশ রুশ প্রেসিডেন্ট নেবেন ভার্চুয়ালি। সীমান্ত ইস্যুতে মুখোমুখি অবস্থানে থাকা চীন-ভারতও বসতে পারে আলোচনার টেবিলে।
দক্ষিণ আফ্রিকার কূটনীতিক অনিল সুকাল এ প্রসঙ্গে বলেন, এমন এক সময়ে ব্রিকস সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যখন বিশ্ব নানামুখী অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে। সম্মেলনে আসা বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা একে অপরের সাথে যোগাযোগ ও কথা বলার সুযোগ পাবেন। আমরা আশা করছি এতে তাদের মধ্যকার বিবদমান নানা ইস্যুতে আলোচনা ও সমাধানের সম্ভাবনা তৈরি হবে।
মূলত, এজেন্ডা বাস্তবায়ন এবং লক্ষ্য অর্জনই এবারের ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের মুল উদ্দেশ্য। সেক্ষাত্রে প্রধান ইস্যু হতে যাচ্ছে জোটের সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্র বাড়ানো। ব্রিকস সদস্য হওয়ার পর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক যোগাযোগ ব্যাপক হারে বেড়েছে। ব্রিকসে যুক্ত হওয়ার পর চীনে দক্ষিণ আফ্রিকার রফতানি বেড়েছে ৪ গুণ। চীন পরিণত হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার সবথেকে বড় বাণিজ্য সহযোগী রাষ্ট্রে। সে ধারাবাহিকতায়ই, এবার উন্নয়নশীল বিশ্বে আরও রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্র বাড়ানোর দিকে নজর দেবে রাশিয়া ও চীন।
এ প্রসঙ্গে ব্রিকস কো-অপারেশন স্টাডিজের পরিচালক ওয়াং লি বলেন, বৈশ্বিক গভর্নেন্স সিস্টেমকে আরও কিছুটা সংস্কার করাই ব্রিকসের উদ্দেশ্য। সে লক্ষ্যেই বাড়ানো হবে জোটের পরিধি। অন্তর্ভূক্তিমুলক উন্নয়নই আমাদের লক্ষ্য। সেটা বাস্তবায়নেই বাড়ানো হবে জোটের পরিধি।
যদিও সবচেয়ে বেশি আলোচনা চলছে ব্রিকসের সদস্য বাড়ানো ইস্যুতে। এখন পর্যন্ত ২২টি দেশ আবেদন জানিয়েছে ব্রিকসের সদস্য হতে। পশ্চিমা-বিরোধী যৌথ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সৌদি আরবকে কাছে টানতে আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেয়া হতে পারে এমন সম্ভাবনার কথাও বলছেন বিশ্লেষকরা।
এ প্রসঙ্গে চীনে নিযুক্ত দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধি সিয়াবোঙ্গা সাইপ্রিয়ান বলেন, ব্রিকস কোনো প্রচলিত জোট না। এ জোটের মূল লক্ষ্য হলো বিভাজন দূর করে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়ন করা। সে প্রচেষ্টাই বাস্তবায়ন করা হবে। এদিকে, অর্থনীতিবদরা বলছেন বাণিজ্যিক সুবিধার্থে জোট সদস্যদের মধ্যে নেয়া হতে পারে অভিন্ন মুদ্রা চালুর উদ্যোগ।