কোরবানি উপলক্ষে প্রস্তুত খামারিরা, আছে শঙ্কাও

সময়: 6:51 am - July 10, 2021 | | পঠিত হয়েছে: 89 বার
কোরবানি উপলক্ষে প্রস্তুত খামারিরা, আছে শঙ্কাও

ঢাকা: বাহারি নাম আর ভিন্ন দামের গরু প্রস্তুত করেছেন খামারিরা। আছে কালো ও সোনালী রঙের মহিষও। তবে করোনায় লকডাউনের প্রভাব নিয়েও শঙ্কায় আছেন তারা। অবশ্য কোনো কোনো খামারে এরই মধ্যে ৪০ থেকে ৫০ ভাগ গরু বিক্রি হয়ে গেছে বলে দাবি মালিকদের।

কোরবানির ঈদ সামনে রেখে বিশাল দেহি একেকটা গরু পালন করেছেন খামারিরা। বেশি ওজনের গরুগুলোর মধ্যে রয়েছে ফ্রিজিয়ান ও ব্রাহামা জাতের।

শাহীওয়াল জাতের ৭২০ কেজি ওজনের একটি গরুর দাম চাওয়া হচ্ছে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা। এর আরো কিছু গরু রয়েছে খামারটিতে, দামও কাছাকাছি।

কেরানীগঞ্জের নেকরোজবাগের আতাসুর রোডের এই খামারে রয়েছে তিনশো গরুর পাশাপাশি কালো ও সোনালী রঙের মহিষও। সাড়ে ৮শ’ থেকে ৯শ’ কেজি ওজনের মহিষের দাম চাওয়া হচ্ছে সাড়ে তিন থেকে চার লাখ টাকা।

মিরকাদিম, খাটোজাতের ভূটানি ও দেশি ক্রস শাহীওয়াল গরুই বেশি রয়েছে খামারটিতে। সারি সারি করে রাখা গরুগুলো রয়েছে ক্রেতার অপেক্ষায়।

খামারিরা জানান, বড় গরু সব সময় কমই পাওয়া যায়। আমাদের এখানে পাকিস্তানী শাহীওয়াল, ভারতীয় বলদ, নেপালী ষাঁড় ও ফ্রিজিয়ান জাতের গরু আছে। এগুলো আমাদের খামার থেকেই বিক্রি হয়ে যায়।

এক ক্রেতা জানান, কোরবানির জন্য গরু যদি পরে না পাই এই জন্য আগে থেকেই কিনে রাখলাম। চান রাতের দিন বা ঈদের দিন সকালে এসে নিয়ে গেলাম। খামারে আগে গরু কিনে রাখলে আমারে সুবিধে হয়। বাড়িতে গরু রাখার যায়গা নেই।

দিন যত গড়াচ্ছে, ঈদ উপলক্ষে, বিভিন্ন খামারে পালন করা প্রাণীগুলোর প্রতি আগ্রহ বাড়ছে ক্রেতাদের।

কেরানীগঞ্জের বোয়াইল এলাকায় অবস্থিত অ্যালিয়েন কাটল ফার্মের স্বত্বাধিকারী মো. শাহরিয়ার জামাল বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি ক্রেতাকে রিজেনেবল দামের মধ্যে দিতে। এ পর্যন্ত আমাদের খামার থেকে ৩০টি গরু বিক্রি হয়েছে।

এদিকে, করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় কোরবানির আগে লকডাউন শুরু হতে যাওয়ায় কোরবানির পশু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন দিনাজপুর জেলার ৫৮ হাজার খামার মালিক। সারা বছর খামারে পরিশ্রম ও বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করার পর এখন পশুর বাজার ও দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তারা।

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নে বিশাল গরু ও ছাগলের খামার গড়ে তুলেছেন ঝলঝলি বহুমুখী সমবায় সমিতি নামের একটি সমবায় সংগঠন। ঐ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল খান জানান, এবার কোরবানি সামনে রেখে লাভের আশায় তারা ৫৩টি গরু ও ২৩টি ছাগল প্রস্তুত করেছেন। বিনিয়োগও করেছে প্রচুর অর্থ। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় এবং লকডাউন শুরু হতে যাওয়ায় এখন গরু ও ছাগলের বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় তারা। লকডাউন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে পশুর দাম কমতে শুরু করেছে। তিনি জানান, যদি কোরবানিতে পশুর হাট না বসে তাহলে ন্যায্য দাম তারা পাবেন না। এতে আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিতে পড়তে হবে।

একই কথা জানান বিরল উপজেলার ঝিনাইকুড়ি গ্রামের প্রান্তিক খামার মালিক কালু মোহাম্মদ। তিনি জানান, কোরবানি সামনে রেখে পরিবারের সর্বস্ব ব্যয় করে তিনি পাঁচটি গরু মোটাতাজা করেছেন। নিজে ঠিকমতো না খেয়ে গরুর পেছনে ব্যয় করেছেন অর্থ ও শ্রম। এখন দেশের যে অবস্থা, তাতে সঠিক দাম না পেলে পথে বসতে হবে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি। শুধু আব্দুল আউয়াল খান বা কালু মোহাম্মদ নয়, একই রকম শঙ্কা ব্যক্ত করেন দিনাজপুর জেলার ৫৮ হাজার খামার মালিক।

এই বিভাগের আরও খবর