দেশ এখন শতভাগ ‘ব্যক্তিতন্ত্রের’ ওপর চলছে’: গয়েশ্বর
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘দেশে যে গণতন্ত্র নেই, সেটা আর নতুন করে আমি বলি না। বরং আমি বলি, দেশ এখন শতভাগ ‘ব্যক্তিতন্ত্রের’ ওপর চলছে। একজন ব্যক্তির (প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ইঙ্গিত করে) ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর পুরো দেশ চলছে। আমাদের মহান বিজয়ের এই মাসে আজকের আহ্বান- ‘ব্যক্তিতন্ত্র নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’।’
বৃহস্পতিবার (০৩ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় সম্প্রতি বাউনিয়া বেরিবাঁধ সংলগ্ন বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পবিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সহ-সভাপতি কে এম মোয়াজ্জেম হোসেনের উদ্যোগে চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, পাতিল, কড়াই, প্লেট, চামজ,মগ ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ৭৫টি পারিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে বলে জানান মহানগর উত্তর বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র নেই। আর গণতন্ত্র না থাকলে সেখানে আইনের শাসন থাকে না। এ অবস্থায় দেশের কোনও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে না। রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো যদি নিজস্ব চিন্তা-ধারা ও ন্যায়-নীতি প্রতিষ্ঠা করতে না পারে জনগণ কোনও সুফল পায় না। জনগণ নানাভাবে নির্যাতিত ও নিগৃহিত হয়।’
তিনি বলেন, ‘এ অবস্থার মধ্যে গণতন্ত্র নাই। আমি গণতন্ত্র নাই বলি না, বলি এক’শ ভাগ ব্যক্তিতন্ত্র। একজন ব্যক্তির ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর পুরো দেশ আজকে চলছে। আমার মনে হয়, আমরা যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে দেশ স্বাধীন করেছি, যে জন্য আমাদের ভাইয়েরা রক্ত দিয়েছেন, জীবন দিয়েছেন সেই স্বাধীনতার মূল চেতনা ‘গণতন্ত্র’কে এই বিজয়ের মাসে পুনরুদ্ধার করাটা খুব জরুরি। আজকের আহ্বান- ‘ব্যক্তিতন্ত্র নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’।’
বস্তিবাসীদের স্থায়ী পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘বিএনপি জনগণের দল, সামর্থ্য অনুযায়ী দলের নেতাকর্মীদের জনগণের পাশে দাঁড়ায়। আরেকটা কথা- শীত আসলেই এ এলাকার বস্তিতে আগুন লাগে কেন? সরকারকে বলব, অত্যন্ত নিরপেক্ষভাবে গুরুত্ব দিয়ে গভীর পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তদন্ত করে আবিষ্কার করুন।’
স্বাধীন দেশের মানুষগুলো কেন এই বস্তিতে থাকবে- এমন প্রশ্ন রেখে সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে গয়েশ্বর বলেন, ‘অবিলম্বে এই বস্তিবাসীদের স্থায়ী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুন। তাদের স্থায়ী ঠিকানা দেন। এই বস্তিতে যে লোকগুলো থাকেন- এই জমি সরকারি। তাহলে প্রতিমাসে কারা বিনা পুঁজিতে মাসোহারা নেয়? এর সাথে কার জড়িত? সরকার ইচ্ছে করলেই এদের খুঁজে বের করতে পারে। কিন্তু সেই পারার কাজটা সরকার করে না।’
ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক, ঢাকা মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি কে এম মোয়াজ্জেম হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম পারভেজ, সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রহমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, রূপনগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি কাওছার আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল সাজেদুল আলম টুটুল, বিএনপি নেতা আশরাফ আলী গাজী, মোতালেব, নজরুল ইসলাম নজরুল নজু, জামাল হোসেন বাপ্পিসহ কয়েক হাজার নেতাকর্মী।