অধ্যাপক এমাজউদ্দিনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে বিএনপি

সময়: 11:04 am - July 17, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 44 বার
অধ্যাপক এমাজউদ্দিনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে বিএনপি

ঢাকা: উপমহাদেশের পন্ডিত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অসংখ্য বই-এর রচয়িতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এমাজউদ্দিন আহমদের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে বিএনপি।

শুক্রবার (১৭ জুলাই) সকালে কাটাবনের এলিফ্যান্ট রোডে নিজের বাসায় তার মরদেহে দলের পক্ষ থেকে পুস্পস্তবক অর্পন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি কিছুক্ষণ তার মরদেহের সামনে নিরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।

পরে গণমাধ্যমের সামনে তিনি বলেন, ‘তিনি (অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমদ) এভাবে হঠাত করে চলে যাবেন-এটা আমরা কেউ বিশ্বাস করতে পারছি না। কারণ কয়েকদিন আগে পর্যন্ত আমরা তার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি ভার্চুয়ালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেবের শাহাদাত বার্ষিকীর আলোচনায় এসেছিলেন। তার এই চলে যাওয়া আমাদের জন্য একটি বিশাল বিশাল শূন্যতার সৃষ্টি করলো এবং তার এই শূন্যতা পুরণ হওয়ার নয়।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে, দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আমরা তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি এবং পরম করুনাময় আল্লাহতালার কা্ছে এই দোয়া চাইছি, আল্লাহতালা তাকে যেন সমস্ত গুনাহ মাফ করে দিয়ে বেহেস্ত নসিব করেন।’

প্রবীন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমেদকে রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে অভিহিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদ সাহেব বাংলাদেশের অভিভাবক ছিলেন। স্বাধীনতাকামী, গণতন্ত্রকামী মানুষের অভিভাবক ছিলেন। তিনি সত্যিকার অর্থেই একজন নির্লোভ নিবেদিত প্রাণ দেশপ্রেমিক একজন শিক্ষাবিদ ছিলেন।’

‘আমাদের চরম দুর্ভাগ্য আমরা এইরকম একজন অভিভাবককে শুধু বিএনপি নয়, গোটা জাতি হারাল। যারা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছে, যারা স্বাধীনতাকামী, যারা গণতন্ত্রকামী… তিনি সবসময় চেয়েছেন বাংলাদেশে একটা সত্যিকার অর্থে একটা উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মিত হোক, বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে একটা উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হোক, জনগনের মুক্তি হোক-এটাই উনি চেয়েছিলেন। তিনি সারাজীবনটা ধরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্রের জন্য তার লেখনি অব্যাহত রেখেছেন। তার জীবনের সমস্ত কর্মটাই ছিলো এই বাংলাদেশের জন্য।’

তিনি বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ সাহেব একজন তারকা ছিলেন, সুর্য ছিলেন। সেই সুর্যের আলো আমরা সবাই আলোকিত হতাম। তার অসংখ্য লেখা রয়েছে। তার লেখাগুলো রাষ্ট্র বিজ্ঞানের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখা। সবশেষে যে বইটি তিনি কিছুদিন আগে প্রকাশ করেছেন আবদুল হাই শিকদারসহ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ওপর। এটা একটা ডকুমেন্ট। এরকম অসংখ্য লেখা আছে ও বই রয়েছে।’

শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতিও সমবেদনা জ্ঞাপন করেন বিএনপি মহাসচিব।

এর আগে বিএনপি মহাসচিব এলিফ্যান্ট রোডের বাসায় গিয়ে তার ছেলে জিয় হাসান ইবনে আহমদের সাথে কথা বলেন এবং পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান।

এ সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সদরুল আমিন, কবি আবদুল হাই শিকদার, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, সাবেক ছাত্র নেতা সুরঞ্জন ঘোষসহ বিশ্ববদ্যালয়ের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

মৃত্যু সংবাদের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আছে। সকালে বাসায় ছুটে যান বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইকবালুর রহমান রোকন, সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ বিএনপি নেতারা। তারা সদ্য প্রয়াত প্রবীন এই শিক্ষকের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমূখ পৃথক শোকবার্তায় অধ্যাপক এমাজউদ্দিীন আহমদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শোক প্রকাশ করেছেন।

এই বিভাগের আরও খবর