তোপখানা রোডে শিশু গৃহকর্মীকে নির্মম নির্যাতন, স্বামী-স্ত্রী গ্রেপ্তার
ঢাকা; সুইটি নামের এক শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে রাজধানীর তোপখানা রোডের বাসা থেকে এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শিশুটিকে নির্যাতনের আঘাতের চিহ্নসহ কিছু ছবি এক প্রতিবেশী ফেসবুকে পোস্ট করার মাত্র দেড় ঘণ্টার মধ্যে এদের গ্রেপ্তার করা হয়। ৩ জুলাই শনিবার রাতে স্বামী মো. তানভির আহসান এবং স্ত্রী অ্যাডভোকেট নাহিদকে গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানা-পুলিশ।
ছবিতে দেখা যায়, সুইটির চোখের নিচে আঘাতের চিহ্ন, হাতে গুরুতর জখম। অপর একটি ছবিতে মেয়েটির নিতম্বের দুপাশে আগুনে পোড়া ঘা। ফেসবুকের এই পোস্টটি একজন সংবাদকর্মীর চোখে পড়লে তিনি তা বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন উইংকে পাঠিয়ে দ্রুত সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। ঘটনাস্থল কোন থানার অধীনে তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত না হওয়ায় মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনসের উইং বিষয়টি ওসি রমনা মো. মনিরুল ইসলাম, পিপিএম এবং ওসি শাহবাগ মওদুত হাওলাদারকে জানায়।
উভয় থানা থেকেই পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলের যায়। পরে জানা যায় ঘটনাস্থলটি শাহবাগ থানার অধীনে। এরপর, ওসি শাহবাগ মওদুত হাওলাদারের তাৎক্ষণিক তৎপরতায় শাহবাগ থানার ইন্সপেক্টর অপারেশনস মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে এসআই মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ পুলিশের একটি টিম মেয়েটিকে উদ্ধার করে। একই সঙ্গে নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত মো. তানভির আহসান এবং অ্যাডভোকেট নাহিদকে গ্রেপ্তার করে।
জানা যায়, মেয়েটির নাম সুইটি। বয়স ১২ বছর। বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন থানায়। গ্রাম নবাবপুর। অভাবের তাড়নায় দরিদ্র বাবা-মা তাকে রাজধানীর তোপখানা রোডে একটি বাসায় গৃহকর্মীর কাজে দিতে বাধ্য হয়েছেন। এই বাসায় সে নয় মাস ধরে কাজ করছে। প্রায় প্রতিদিনই নানা অজুহাতে গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী তাঁকে মারধর করত। একপর্যায়ে মেয়েটিকে নির্যাতনের আঘাতের চিহ্নসহ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন এক প্রতিবেশী। ৩ জুলাই শনিবার রাতে ছবিগুলো পোস্ট করে তিনি দ্রুত সহযোগিতা ও আইনি ব্যবস্থার আহ্বান জানান। এর জেরেই এ দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনসের পক্ষ থেকে মো. সোহেল রানা বলেন, ফেসবুক পোস্টের মাত্র দেড় ঘণ্টার মধ্যে এবং বিষয়টি পুলিশের নজরে আসার মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে ভিকটিমকে উদ্ধার ও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কোথাও এমন ঘটনা দেখলে ৯৯৯ এ কল করার আহ্বানও জানান তিনি।