লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশী হত্যা ও মানব পাচারের বিষয়ে যা জানালো পুলিশ

সময়: 9:11 am - June 8, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 84 বার
লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশী হত্যা ও মানব পাচারের আসামী গ্রেপ্তার

ঢাকা: ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশী হত্যা ও মানব পাচারের ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে । গ্রেপ্তারকৃতরা হলো -বাদশা মিয়া, জাহাঙ্গীর মিয়া, আকবর আলী, সুজন, নাজমুল হাসান ও লিয়াকত শেখ ওরফে লিপু।

আজ সোমবার ডিএমপি’র মিডিয়া সেন্টারে এ বিষয়ে ব্রিফিংকালে ডিবি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোঃ আবদুল বাতেন বলেন, মানব পাচারের ঘটনায় ভিকটিমদেরকে ভারত, দুবাই, মিশর হয়ে লিবিয়াতে পাচার করার পরিকল্পনা, প্রক্রিয়া করা এবং ক্ষেত্রবিশেষে বিমানবন্দর, ঢাকাকে ব্যবহার করার কারণে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ দায়েরকৃত মামলা সমূহের ছায়া তদন্ত শুরু করে ।

তিনি জানান, এ সময় তাদের হেফাজত হতে চারটি পাসপোর্ট, দুইটি মোবাইল ফোন ও টাকার হিসাব সম্মলিত দুইটি নোট বুক উদ্ধার করা হয়।

বাতেন আরো বলেন, গতকাল ৭ জুন, গোয়েন্দা বিভাগের একাধিক টিম রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে। ২৮ মে, লিবিয়ার মিসদাহ উপ-শহরের মরুভ’মিতে ২৬ জন বাংলাদেদেশী গুলি করে হত্যা করা হয়।

পুলিশের এই কমকর্তা বলেন, মারাত্বক ভাবে আহত করা হয় আরো ১১ জনকে। লিবিয়া এবং ইটালীতে অভিবাসী হতে যাওয়া শত শত বাংলাদেশী বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনে আহত, নিহত ও চিরতরে নিখোঁজ হয়েছেন। এ সকল ঘটনায় ভিকটিমদের আত্মীয় স্বজনদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাদারীপুর জেলা, কিশোরগঞ্জ জেলা এবং ডিএমপি’র পল্টন ও তেজগাঁও পৃথক থানায় মামলা রুজু হয়।

তিনি বলেন, লিবিয়ার বিভিন্ন এস্টেটে কাজ ও লিবিয়া হতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশী দালালরা অন এ্যারাইভাল ও ভিজিট ভিসার মাধ্যমে লোকজনকে লিবিয়ায় পাচার করে। লিবিয়ায় পাচার করে ভিকটিমদের লিবিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে আটক রেখে অমানুষিক শারিরীক এবং মানসিক নির্যাতন করে।

বাতেন বলেন, নির্যাতিত ভিকটিমদের কান্নাকাটি, আকুতি মিনতি করা অডিও অথবা সরাসরি মোবাইলে কথাবর্তা বাংলাদেশে অবস্থানরত তাদের পিতা-মাতা আত্মীয়-স্বজনদেরকে পাঠায় ও টাকা দাবি করে। ভিকটিমদের বাচাঁতে তার আত্মীয়-স্বজন কোন কোন ক্ষেত্রে ভিটাবাড়ি বিক্রি করে টাকা পাঠায়।

তিনি আরো জানান, নিহত মাদারীপুরের ৭ জনকে বাংলাদেশ হতে লিবিয়াতে আমির হোসেনের কাছে পাচার করেছিল তার ভাই গ্রেফতারকৃত আকবর হোসেন। গ্রেফতারকৃত বাদশা মিয়া ১৩ বছর যাবৎ লিবিয়াতে অবস্থান করে। লিবিয়ার বেনগাজী , জোয়ারা শহরে তার নিজস্ব ক্যাম্প আছে। সমগ্র বাংলাদেশ থেকে সে নিয়মিত লিবিয়াতে মানব পাচার করে, পাচারকৃত বাংলাদেশীদেরকে তার ক্যাম্পে আটক রেখে ইটালীতে সমুদ্রপথে মানুষ পাঠানোর gambling করে। মাদারীপুরের নিহতদের মধ্যে ৪ জনকে তার ক্যাম্পে আটক রেখে ত্রিপোলীতে পাচার করার এক পর্যায়ে এ হত্যাকান্ড ঘটে।

আবদুল বাতেন বলেন, গ্রেপ্তারকৃত জাহাঙ্গির আলম ঢাকাতে অবস্থান করে নিজস্ব কায়দায় বেনগাজিতে মানব পাচার ছাড়াও স্থানীয় অন্যান্য দালালদের কাছ থেকে প্রাপ্ত পাসপোর্টগুলো স্ক্যান করে সফট কপি দুবাই এবং লিবিয়াতে প্রেরণ করে টুরিস্ট ভিসা, অন অ্যারাইভাল মোয়াফাকা সংগ্রহ করে, বেনগাজিস্থ ক্যাম্পে নির্ধারণ করে। গ্রেপ্তারকৃত সুজন ভিকটিম ইছার উদ্দিন ,বিজয় ও মোঃ সজল দেরকে লিবিয়ায় পাঠায়। ২৮ মে লিবিয়ায় ট্র্যাজিডিতে ভিকটিম মোঃ সজল আহত হয়ে লিবিয়ায় এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। নিখোঁজ মোঃ বিজয় ও ইছার উদ্দিন এর কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।

গ্রেপ্তারকৃতদেরকে পল্টন থানা ও তেজগাঁও থানায় মানব পাচার ও সন্ত্রাস বিরোধী আইনে রুজুকৃত মামলায় বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কমকর্তা

এই বিভাগের আরও খবর