ইসরায়েলি সেনা থেকে বাঁচতে ফিলিস্তিনি শিশুদের ইঁদুর-বিড়াল খেলা
ঢাকা: স্কুলে যাওয়া-আসা সারা বিশ্বের বেশিরভাগ শিশুর জন্য একটি স্বাভাবিক এবং অপেক্ষাকৃত সহজবোধ্য ঘটনা। কিন্তু ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরের নাবলুসের দক্ষিণের গ্রাম লুবান আশ-শারকিয়ায় শিশুদের স্বাভাবিক এই ঘটনাই পরিণত হয়েছে ইঁদুর-বিড়াল খেলায়। কারণ, এসকল শিশুরা স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী এবং সৈন্যদের এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়।
উত্তর পশ্চিম তীরের নাবলুস শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দক্ষিণের লুবান আশ-শারকিয়ায় প্রায় ৩ হাজার ৫০০ ফিলিস্তিনির বসবাস। সেখানেই রয়েছে এলি এবং মা’আলে লেভোনা নামের দুটি অবৈধ ইসরায়েলি বসতি। প্রতিদিন বিকেলে সেই গ্রামের প্রবেশপথ রামাল্লাহ-নাবলুসের প্রধান সড়কে ইসরায়েলি সৈন্যরা অবস্থান নেয়। সেখানে পায়ে হেঁটে টহলরত ইসরায়েলি সৈন্য এবং ইসরায়েলি বসতিদের আক্রমণ থেকে বাঁচতে লুবানের স্কুলশিশুরা বাড়ি ফেরার জন্য বিকল্প পথ বেছে নেয়।
স্থানীয় মাওদ আওইস বলেন, ‘আমি আমার ছেলেকে প্রতিদিন স্কুলে নিয়ে যাই এবং স্কুল থেকে নিয়ে আসি, কারণ ইসরায়েলি সেনারা যেকোন সময় আমার ছেলেকে গ্রেপ্তার করতে পারে বলে আমি ভয়ে থাকি।’
তার ১১ বছর বয়সী ছেলে মাহমুদ জানায়, বেশ কয়েকবার তার বন্ধুরা সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাদের মুখোমুখি হয় এবং সেকারণেই সেও সব সময় ভয়ে থাকে। এসময় মাহমুদ আরও বলে, ‘একদিন আমরা কয়েকজনের একটি দল বাড়ি ফিরছিলাম, তখন ইসরায়েলি সৈন্যরা আমাদের থামিয়ে হুমকি দেয়।’
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে দুই সেনাসদস্যের একটি গাড়ি সেই গ্রামের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে, এমন সময় বাড়ি ফিরতে থাকা একদল স্কুলছাত্রীকে উদ্দেশ্য করে তারা চিৎকার করতে থাকে। একারণে টহলরত ইসরায়েলি সেনাদের এড়িয়ে চলতে অধিকাংশ সময় শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাতায়াতের জন্য বিকল্প পথ হিসেবে গ্রামের মাঠকেই বেছে নেয়।
ওই গ্রামের বাসিন্দা ফালাস্টিন নোবানি বলেন, ইসরায়েলি সেনারা প্রায়ই সেখানে স্কুলশিশুদের পথ রোধ করে তল্লাশি চালায় এবং পাশের বসতিতে পাথর নিক্ষেপের অভিযোগ এনে হেনস্তা করে। লুবান আশ-শারকিয়া ছাড়াও পাশের উরিফ গ্রামের শিশুদেরও এমন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়।
উরিফের গ্রামের আমের সাফাদি জানান, উরিফা গ্রামের পাশের পাহাড়ে অবস্থিত ইটজহার বসতিরা তার সন্তানদের ওপর হামলা করতে পারে বলে তিনি প্রতিদিন সন্তানদের স্কুলে নিয়ে যান এবং নিয়ে আসেন। তিনি আরও বলেন, এখানে বসতি স্থাপনকারীরা অতীতে বেশ কয়েকবার স্কুলে হামলাও চালিয়েছে।