তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার ২০ শতাংশ করতে অর্থমন্ত্রীকে চিঠি

সময়: 7:09 pm - June 14, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 122 বার
তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার ২০ শতাংশ করতে অর্থমন্ত্রীকে চিঠি

ঢাকা: ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অতালিকাভুক্ত কোম্পানির কর কমানোয় ভালো কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসতে নিরুৎসাহিত হবে বলে অভিমত দিয়েছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ)।

সংগঠনটি বলছে, বর্তমানে তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার ১০ শতাংশ ব্যবধান থাকা সত্ত্বেও ভালো কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসতে চায় না। এর মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার কমানোর মাধ্যমে আরও নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। এ সমস্যা সমাধানে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার ২০ শতাংশ করা উচিত।

রোববার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে চিঠি দিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরের চূড়ান্ত বাজেটের জন্য এই দাবি করেছে বিএমবিএ। সংগঠনটির সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মো. রিয়াদ মতিন এ চিঠিতে সই করেন।

চিঠিতে বলা হয়, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার ২.৫ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। যার ফলে এখন তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারের পার্থক্য হবে ৭.৫ শতাংশ। ফলে ভালো ও বড় প্রতিষ্ঠানগুলো আরও বেশি নিরুৎসাহিত হবে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির বিষয়ে। অথচ ১০ শতাংশ পার্থক্যের মধ্যেও নিয়ন্ত্রক সংস্থা ভালো কোম্পানি আনতে পারছে না বলে প্রচুর অভিযোগ প্রচলিত আছে। সত্যিকার অর্থে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কিছুই করার নেই। যারা প্রচলিত আইন মেনে শেয়ারবাজারে আসতে চায়, নিয়ন্ত্রক সংস্থা তাদের অনুমোদন দেয়।’

‘এই পরিস্থিতিতে শেয়ারবাজারের গভীরতা ও গতিশীলতা বৃদ্ধিতে ভালো ও বড় কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করের হারের পার্থক্য বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’

‘শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির হার ২৫ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ করার অনুরোধ করছি। তাতে বৃহৎ ও লাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলো শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহী হতে পারে। এর মাধ্যমে সরকারের মোট কর আয় কমবে না, বরং বাড়তে পারে। কারণ, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি অনেক বেশি তদারকি হয়, যার ফলে কর ফাঁকি দেয়ার সুযোগ কম।’

মার্চেন্ট ব্যাংকের করহার কমানোর দাবি জানিয়ে বিএমবিএ’র চিঠিতে আরো বলা হয়, ‘বাংলাদেশে মার্চেন্ট ব্যাংকের ব্যবসার সুযোগ অত্যন্ত সীমিত। আর্থিক সক্ষমতার অভাব, নিজস্ব মূলধন ব্যতীত অন্য কোনো উৎস থেকে অর্থ যোগানের সুযোগ নেই। দীর্ঘ দিন ধরে শেয়ারবাজার মন্দা অবস্থায় আছে। তার ওপর মার্চেন্ট ব্যাংকের করহার ৩৭.৫ শতাংশ, যা মার্চেন্ট ব্যাংকের জন্য বাড়তি চাপ। তাছাড়া মার্চেন্ট ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মানুযায়ী আর্থিক প্রতিষ্ঠান নয়। তাই মার্চেন্ট ব্যাংকের করহার অন্যান্য অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির মতো ৩২.৫ শতাংশ নির্ধারণ করা উচিত।’

শেয়ারবাজারের অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শর্ত তুলে দেয়ার দাবি জানিয়ে বলা হয়েছে, ‘অপ্রদর্শিত আয় ১০ শতাংশ কর প্রদানের মাধ্যমে নিয়মিত করার সুযোগ রাখা হয়েছে ফ্ল্যাট ক্রয়, নগদ জমা, ব্যাংক জমা, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ও শেয়ারবাজারে ৩ বছরের লক-ইন শর্তে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে। এ ক্ষেত্রে অন্যান্য খাতের ন্যায় শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্যও কোনো শর্ত থাকা উচিত না। অন্যথায় শেয়ারবাজারের চেয়ে ব্যাংকে আমানত রাখা বা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করার বিষয়ে মানুষ আগ্রহী বেশি হবে। এতে করে শেয়ারবাজার উপকৃত হবে না।’

‘শেয়ারবাজারের গভীরতা ও গতিশীলতা বৃদ্ধিতে বন্ড সহায়ক হতে পারে এবং এ বিষয়ে অনেক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। আমাদের দেশের বিনিয়োগকারীরা ইক্যুইটি মার্কেটে বিনিয়োগ করে ক্যাপিটাল গেইনে বেশি আগ্রহী। বন্ডকে আকর্ষণীয় ও জনপ্রিয় করতে হলে বন্ডের আয়ের ওপর করহার কমাতে হবে। অন্যথায় বিনিয়োগকারীরা বন্ডে বিনিয়োগে আগ্রহী হবে না। জিরো কুপন বন্ডকে আকর্ষণীয় বিনিয়োগ হিসাবে গণ্য করার জন্য কর প্রত্যাহার করা প্রয়োজন।’

চিঠিতে বলা হয়, ‘শেয়ারবাজারের দৈনন্দিন লেনদেনের ওপর ০.০৫ শতাংশ কর কাটা হয় এবং এটি ফেরত বা সমন্বয়যোগ্য নয়। যার ফলে একদিকে ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে কর প্রদান করে যাচ্ছে। বেশ কয়েক বছর আগে এ করহার ছিল ০.০১৫ শতাংশ। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই করহার কমিয়ে আগের ন্যায় ০.০১৫ শতাংশ করার দাবি জানাচ্ছি।’

এই বিভাগের আরও খবর