এবার দ্বৈত ভোটার হওয়ায় নতুন করে ডা. সাবরিনার বিরুদ্ধে ইসির মামলা

সময়: 7:12 am - August 31, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 154 বার
এবার দ্বৈত ভোটার হওয়ায় নতুন করে ডা. সাবরিনার বিরুদ্ধে ইসির মামলা

ঢাকা: মিথ্যা তথ্য দিয়ে দ্বৈত ভোটার হওয়া ও একাধিক জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেয়ার অভিযোগে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের বরখাস্ত হওয়া চিকিৎসক ও জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

গুলশান থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মমিন মিয়া বাদী হয়ে রাজধানীর বাড্ডা থানায় ডা. সাবরিনার বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার বাদী গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘মিথ্যা তথ্য দিয়ে দ্বৈত ভোটার হয়ে এবং একাধিক জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে আইন অনুযায়ী অপরাধ করেছেন সাবরিনা। মামলায় তার দুটি এনআইডির তথ্য তুলে ধরে বিবাদীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’

২০১০ সালের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইনের ১৪ ও ১৫ ধারায় এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। ১৪ ধারায় মিথ্যা তথ্য দেয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ১ বছরের কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের বিধান আছে। আর ১৫ ধারায় একাধিক জাতীয় পরিচয়পত্র নেয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে একই শাস্তি হতে পারে।

ডা. সাবরিনা এখন নভেল করোনা করোনা ভাইরাসের রিপোর্ট জালিয়াতির বহুল আলোচিত মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।

সম্প্রতি সাবরিনা চৌধুরী মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিজের নামে দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়েছেন বলে তথ্যের সত্যতা পায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুটি এনআইডিতে স্বামীর নামের জায়গায় পৃথক ব্যক্তির নাম পাওয়া গেছে। দুটি এনআইডিতেই বয়সের পার্থক্য দেখানো হয়েছে।

এরইমধ্যে তার দুটি এনআইডিই অকার্যকর (ব্লক) করে দিয়েছে ইসি। একইসঙ্গে ভুল তথ্য দিয়ে দুবার ভোটার হওয়া ও দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র নেয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরেও জাতীয় নিবন্ধন অনুবিভাগকেও নির্দেশ দেয় ইসি। এরই ধারাবাহিকতায় বাড্ডা থানায় ডা. সাবরিনার বিরুদ্ধে নতুন এ মামলা দায়ের হলো।

এর আগে সাবরিনার দুটি এনআইডি ব্লক ও মামলা দায়েরের নির্দেশনার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছিলেন ইসির এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুল ইসলাম।

তখন তিনি বলেছিলেন, ‘গুলশান থানা নির্বাচন কর্মকর্তাকেও সাবরিনার বিরুদ্ধে মামলা করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কোন প্রক্রিয়ায়, কার সুপারিশে তিনি দ্বিতীয়বার ভোটার হয়েছেন এবং এ ঘটনায় আমাদের কেউ কোনও অসৎ উদ্দেশ্যে সহায়তা করেছে কি-না, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

জানা গেছে, ডা. সাবরিনা নিজের নামে দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে মোহাম্মদপুর ও গুলশান নির্বাচন থানার অন্তর্গত এলাকায় দুইবার ভোটার হয়েছেন। দুটি জাতীয় পরিচয়পত্রেই তার নিজের, বাবা-মায়ের ও স্বামীর নাম ভিন্ন রয়েছে।

জানা গেছে, ডা. সাবরিনা ২০১৬ সালের ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় দ্বিতীয়বার ভোটার হন। একটিতে ভোটার হন সাবরিনা শারমিন হোসেন নাম দিয়ে। জন্ম তারিখ ১৯৭৮ সালের ২ ডিসেম্বর। অন্যটিতে ১৯৮৩ সালের ২ ডিসেম্বর। দুটি আইডিতে বয়সের ফারাক ৫ বছর। একটিতে স্বামীর নাম হিসেবে ব্যবহার করেছেন আর. এইচ. হক। আর দ্বিতীয়টিতে স্বামীর নাম লেখা হয়েছে আরিফুল চৌধুরী। একটিতে বাবার নাম সৈয়দ মুশাররফ হোসেন ও মায়ের নাম কিশোয়ার জেসমীন, অপরটিতে মা-বাবার নাম পরিবর্তন করে সৈয়দ মুশাররফ হোসেন ও জেসমিন হুসেন দিয়েছেন।

এদিকে ভুয়া করোনার রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগে গত ৫ আগস্ট জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান চিকিৎসক সাবরিনা আরিফ চৌধুরীসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে অভিযোগপত্র দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিএমপি)। গত ২০ আগস্ট সাবরিনা ও আরিফসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বহুল আলোচিত এ মামলার বিচারকাজ শুরু হয়েছে। এরমধ্যে গত ২৭ আগস্ট মামলার বাদী কামাল হোসেনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। আগামী ৩ সেপ্টেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্য নেয়ার দিন ধার্য রয়েছে।

সাবরিনা-আরিফ ছাড়াও জেকেজি জালিয়াতির ওই মামলার অপর ৬ আসামি হলেন- শফিকুল ইসলাম রোমিও, জেবুন্নেসা, আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ুন কবির হিমু, তানজিলা পাটোয়ারী ও বিপ্লব দাস।

এই বিভাগের আরও খবর