মেজর সেনা হত্যার বিচার চাই: ইলিয়াস কোবরা

সময়: 8:07 am - August 11, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 159 বার
মেজর সেনা হত্যার বিচার চাই: ইলিয়াস কোবরা

ঢাকা: কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ঢাকাই চলচ্চিত্রের খল অভিনেতা ইলিয়াস কোবরাকে নিয়ে দেশের গণমাধ্যম ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।

এমনকি টেকনাফ থানার সদ্য বরখাস্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাসের সঙ্গেও তার ঘনিষ্টতা ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।

তবে এসব অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ দাবি করে ইলিয়াস কোবরা বলেন, ‘আমি জানতামই না যে মেজর সিনহা নামে কেউ আছে। আমি জীবনে স্বপ্নেও তাকে দেখিনি। কেন জানি না এমন বড় একটি ঘটনার সঙ্গে আমার নাম জড়িয়ে কাল্পনিক কথা লিখছে। আমি নিজেই মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করি। মসজিদ কমিটিতেও আছি। এসব কারণে এলাকার কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে আছে।’

ইলিয়াস কোবরা বলেন, ‘প্রথম কথা হচ্ছে আমার কোনও বাগানবাড়ি নেই। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে যেখানে ঘটনা ঘটেছে সেখান থেকে আমার বাড়ি প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে। ঘটনার কথা শুনেছি প্রায় একদিন পর। তখন আমি এ বিষয়ে কোনও কিছু শুনিনি। গত রবিবার আমি ঢাকা থেকে সকাল ১০টার সময় আসি, আসার পরে আমি দেখলাম কয়েকটা অনলাইন পত্রিকা এরকম কথা লিখেছে। আমি হান্ড্রেট পার্সেন্ট দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি- এসব সম্পূর্ণ বানোয়াট। আমার সঙ্গে সিনহা সাহেবের কখনো দেখা হয়নি, আমি চিনিও না, আমার কোনও বাগানবাড়ি নেই। এটা যে ভদ্রলোক বলছেন তাকে আমি আপনার মাধ্যমে বলতে চাই- তিনি এটার প্রমাণ দিক যে, সিনহা সাহেবের সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল। বাগানবাড়ি তো দূরের কথা আমার এসব কিছুই নেই। আমি মনে করি একজন অভিনয় শিল্পী এবং একজন চলচ্চিত্র শিল্পী হিসেবে আমার সম্মানটুকু ক্ষতি করা হচ্ছে এ বিষয় টেনে এনে।’

অনেকে অভিযোগ করেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এসেছে- আপনার সঙ্গে ওসি প্রদীপের ভালো সম্পর্ক ছিল। ক্রসফায়ারের নামে অর্থ আদায়ের অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে-
এমন প্রশ্নে কোবরা বলেন, ‘এখানে অভিযুক্ত ব্যাপারটা হচ্ছে- আমি লিয়াকত সাহেবকে যিনি টেকনাফ থানার ইনচার্জ, উনাদের সাথে কথাগুলো বলেছি বা যেসব কথা আমার সঙ্গে তার রেকর্ড আছে- এমন একটা রেকর্ড দেখান যা আমি উনাদের সাথে বলেছি, এমন একটা রেকর্ড দেখান। একটা ব্যাপারে আমার কথা হতেই পারে, সেটা হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গঠিত নোয়াখালীপারাতে মাদকবিরোধী একটি কমিটিতে আছি আমি। এখানে ২৪ জন সদস্য আছে এবং কমিটির সভাপতি হিসেবে আমি সামাজিক দায়িত্বটা পালন করি। আমি ওসির সঙ্গে কথা বলেছি আজ থেকে ২০-২৫ দিন আগে। আমার কাছে রেকর্ড আছে, আমি তার কাছে একটা দরখাস্ত দিয়েছিলাম। একটা আবেদনের মাধ্যমে আমি লিখেছি যে- করোনার কারণে ইয়াবা সেবন বেড়েছে। এটা তদন্ত করে সুব্যবস্থা নেয়ার জন্য আপনার প্রতি অনুরোধ রইলো।’

ওসির সঙ্গে আপনার সখ্যতা আছে কি?
জবাবে এই খল অভিনেতা বলেন, ‘না না ওসি সাহেবের সঙ্গে আমার কোনও সখ্যতা ছিল না। এটা কখনো না। চ্যালেঞ্জ করে বলছি, প্রমাণ করুক ভয়েস, ছবি এমন একটা কিছু। এটা অসম্ভব বিষয়।’

মেজর সিনহার বিষয়ে আপনার কিছু বলার আছে কি?
কোবরা বলেন, ‘এটাতো একটা মর্মান্তিক ঘটনা, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটা ঘটনা। সেনাবাহিনীর অফিসার মেজর সিনহার এ ঘটনাটা আজকে আলোচনায় আসছে। আলোচনায় আসাও উচিত। যেন এটার সুষ্ঠু তদন্ত হয়। এটার ব্যাপারে আমি আরও সেমিনারে কথা বলেছি। এসপি মহোদয় সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে এবং কথা হয়েছে যে, এই হত্যা মারাত্মক একটা বিষয়। এ কারণে তো সমাজের কোনও উন্নতি হবে না, এটা ক্ষতিকর বিষয়, আমি একজন শিল্পী হিসেবে বলবো।’

এখন তো অনেকে বলছে কথিত বন্দুকযুদ্ধগুলো সাজানো, ওখানে অনেক নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, অনেক ইয়াবা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে- এ বিষয়ে আপনার কোনও বক্তব্য আছে কী?
কোবরা বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই। কিন্তু আপনি তো শুনছেন আমিও শুনছি। এই ঘটনা যখন ঘটেছে তখন আমি বাড়িতে আর এই ডিজিটাল সময়ে কোনও কিছু গোপন রাখার মতো না।’

৩১ জুলাই ঈদের আগের দিন মেজর সিনহার সঙ্গে আপনার দেখা হয়েছে কি?
‘আমি প্রথমেই বললাম এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা বিষয়। এটা আমাকে না জিজ্ঞেস করে আসলে একটা ভুল হচ্ছে- আরও দু-তিনজন ছিল তাদের কাছে প্রশ্ন করেন যে আমাকে দেখেছে কিনা।’

তাহলে আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে কেন?
‘অভিযোগটা আমি গ্রামে স্কুল-মাদরাসা করেছি, মসজিদ চালাই এবং সামাজিক কাজ করি। অনেক নেতৃবৃন্দ মনে করেছে আমি ইলেকশন করবো বা রাজনীতি করবো। এজন্য আমার পেছনে লাগিয়ে দিয়েছে বলে আমার কাছে মনে হয়’- দাবি করেন এই ঢালিউডের এ খল অভিনেতা।

এই বিভাগের আরও খবর