ছবি তুলেই ফেরত নিলো করোনার ত্রাণ

সময়: 4:06 am - July 20, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 93 বার
ছবি তুলেই ফেরত নিলো করোনার ত্রাণ

প্রবাস ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে মহামারি করোনা ভাইরাসে সাহায্যের নামে করোনা ত্রাণ বিতরণে কানেকটিকাটের একটি বাংলাদেশি সংগঠন প্রবাসীদের সাথে প্রতারণা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশি আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব কানেকটিকাট (বাক) করোনা ত্রাণ বিতরণের নামে সাধারণ মানুষের হাতে খাদ্যদ্রব্য দিয়ে ছবি তোলার পর তা ফেরত নেয় এবং পরে এসব খাদ্যদ্রব্য আবার ক্রয়কৃত সেই দোকানেই ফেরত দেয়া হয়।

স্থানীয় সময় শনিবার (১৮ জুন) ইস্ট হার্টফোর্ডের একটি রেস্টুরেন্টের মিলনায়তনে স্থানীয় সুধী সমাবেশে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস করেন বাক-এর সাবেক জনসংযোগ সম্পাদক এ কে মেজবাহ উদ্দিন।

তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে এমন জঘন্য ও নিকৃষ্টতম কাজ কোথাও কেউ করেছে কিনা আমার জানা নেই।’

মেজবাহ উদ্দিন এক লিখিত বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশি আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব কানেকটিকাট (বাক)-এর নির্বাচনের আগে এবং পরে নেতৃবৃন্দরা বলেছিলেন কানেকটিকাটের বিভক্ত কমিউনিটিকে তারা ঐক্যবদ্ধ করে বাক-এর নিজস্ব ভবন ও কবরস্থান নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। গত দুই বছরেও তারা এ ধরনের কোন উদ্যোগই নেননি। কানেকটিকাটের অসৎ ব্যবসায়ীদের দ্বারা একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে কমিউনিটির ঐক্যবদ্ধতার বদলে বিভক্তি বৃদ্ধি করেছেন আরও চারগুণ। তাদের এহেন অসামাজিক ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং বাক-এর বর্তমান কমিটির কিছু পদলোভী, অসৎপ্রকৃতি, অসামাজিক ও নারীলিপ্সু ব্যক্তির স্বেচ্ছাচারিতার কারণে কানেকটিকাটে আরও চারটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, গত বছর (২০১৯) পহেলা বৈশাখ পালনে বাক-এর ইন্সুরেন্স ব্যবহার করে (অর্থের বিনিময়ে) ব্রিজপোর্টের একটি ভুইফোঁড় সংগঠনকে হল ভাড়া করে দেওয়া হয়। যা সম্পূর্ণ অনৈতিক ও সংবিধান পরিপন্থি। এ ঘটনাটি অন্য আরেকটি অনুষ্ঠানের জন্য সাংঘর্ষিক পর্যায়ে পৌঁছেছিল। কারন সেখানকার অন্য একটি সংস্থা প্রায় ৬ মাস আগেই ব্রিজপোর্টে বাংলা নববর্ষ পালনের কথা ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেখানে একটি ভুইফোঁড় অখ্যাত সংগঠনকে দিয়ে বাক পাল্টা অনুষ্ঠানে করে কানেকটিকাটবাসীর কাছে বেশ সমালোচনার পাত্র হয়েছিলেন। বাক-কারো পৈতৃক সম্পত্তি নয় যে সংগঠনের ইন্সুরেন্স বা অন্য কিছু অন্যত্র ব্যবহার করবেন।

মেজবাহ উল্লেখ করেন, স্থানীয় প্রবাসীদের সেবা করার লক্ষ্য নিয়ে ২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর বাংলাদেশি আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব কানেকটিকাট (বাক)-এর নির্বাচনে অংশ নেন এবং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রচার ও জনসংযোগ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। শুরু থেকেই বাক-এর অসামাজিক ও অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করার ফলে তার সেই পদ বা দায়িত্ব থেকে তাকে বঞ্চিত করা হয়। কিছু ব্যাক্তি বিশেষ প্রিয় এই সংগঠনটিকে ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটে পরিনত করেছে। তারা এ সংগঠনটিকে জিম্মি করে দিন দিন কমিউনিটিকে আরো দ্বিধা বিভক্ত করছেন।

তিনি বলেন, বাক একটি সম্পুর্ণ অরাজনৈতিক ও অসাম্প্রদায়িক একটি সংগঠন। এ সংগঠনের অনেক গৌরবময় ঐতিহ্য রয়েছে। কতিপয় পদলোভী ব্যক্তির কারনে এ সংগঠনটি আজ তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। গত নির্বাচনের আগে নিজেদের বক্তি স্বার্থ চরিচার্থে তথাকথিত নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মামলা মোকাদ্দমাসহ সামাজের সম্মানীত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কূরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিতেও তারা কুণ্ঠাবোধ করেননি।

মেজবাহ বলেন, জনসংযোগ সম্পাদক পদে তাকে কেন দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে কৈফিয়ত চেয়ে গত বছর (২০১৯) ডিসেম্বরে তিনি ইমেইলের মাধ্যমে সভাপতিসহ সকলকেই অবহিত করেছে, কিন্তু সভাপতি কিংবা কমিটির অন্য কেউ এর কোন সদুত্তর দেয়নি। তিনি সর্বদাই বাক-এর অন্যায়, অনিয়ম,দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ করে আসছেন বলেই তারা তাকে দায়িত্ব থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন, এমনকি তাকে কমিটি থেকে বহিস্কারও করেননি বা-এর নেতৃবৃন্দরা।

আজকে থেকে বাংলাদেশি আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব কানেকটিকাট (বাক)-এর জনসংযোগ সম্পাদক পদে তার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই বলে তিনি তার পদ প্রত্যাহার করে নেন। এখন থেকে বাক কোথাও জনসংযোগ সম্পাদক হিসেবে তার নাম ব্যবহার করেতে পারবে না বলে জানান তিনি।

বাক’র এই জঘন্য, নিকৃষ্টতম ও ন্যাক্কারজনক কাজের জন্য তিনি কানেকটিকাট প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এসময় কানেকটিকাটের বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতৃবৃন্দের মধ্যে মীর সাব্বির আহমেদ, সাদ চৌধুরী বাবু, মীর আজম, হালিম আকবর, হারুন আহমেদ, আনোয়ার মন্ডল, শফি আলম, মোল্লা বাহাউদ্দিন পিয়াল, শামসুজ্জামান দুলাল, আনোয়ার হোসেন হিমু, আরিফুল ইসলাম নিপুন, ইউসুফ মাহির, আনোয়ার মাহমুদ ও আলমগীরসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর