চট্টগ্রাম: করোনায় কর্মহীন, শহর ছাড়ছেন অনেকে
চট্টগ্রাম: সব ধরনের প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কাজ হারিয়ে অনেককেই ছাড়ছেন শহর। করোনায় টানা ৬৬ দিন সব ধরনের প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার প্রভাব পড়ছে চট্টগ্রামের জনজীবনেও। কাজ হারিয়ে অনেককেই শহরের বাস ছেড়ে যেতে হচ্ছে। অনেকেই খরচ কমাতে বাসা বদল করছেন।
চট্টগ্রামের লালখান বাজার এলাকার ভ্যান চালক খলিল মিয়া তিন মাস ধরে কাজ না থাকায় পড়েছেন বিপাকে। ঘর ভাড়া দিতে না পারায় নোটিশ দিয়েছে বাড়িওয়ালা। খলিলের মতোই নানা পেশার লোক স্বপ্নভঙ্গের বেদনা নিয়ে শহর ছেড়ে ফিরে যাচ্ছেন গ্রামে।
শুলকহর এলাকার বাড়িওয়ালা আসিফা বিনতে মোশাররফ। তার তিনটি বাসা কয়েকমাস ধরে খালি। আয়ের পথ বন্ধ হওয়ায় গ্রামে চলে গেছেন অনেক ভাড়াটিয়া। এরকম অবস্থা চলছে পুরো চট্টগ্রামেজুড়ে।
তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী সাইফুল্লাহ মনসুরের তিনটি কারখানায় কাজ করতো প্রায় এক হাজার শ্রমিক। সামান্য কিছু অর্ডার পাওয়া পর চালু করেছেন মাত্র একটি কারখানা।
তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী সুলতান মনসুর বলেন, আমাদের এখন টিকে থাকা না থাকার মত অবস্থা হয়েছে। সেখানে আমাদের অন্য কিছু চিন্তা করার কোন অবস্থাই নেই। আমাদের আগস্টের পর আর কোন অর্ডারই নেই।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, করোনা শুধু আর্থিক বিপর্যয় ডেকে আনেনি- মানসিক বিপর্যয়ও ডেকে এনেছে। চট্টগ্রাম ওমর গণি এমইএস কলেজের অধ্যাপক ববি বড়ুয়া বলেন, রপ্তানিমূলক দেশগুলোতে এখন ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। এর ফলে বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের দেশ থেকে পণ্য নেয়া বন্ধ রেখেছে। এটি কিন্তু ভবিষ্যত অর্থনীতির জন্য হুমকি স্বরুপ।
বিআইডিসের অনলাইন জরিপ বলছে- করোনার প্রভাবে ১৩ শতাংশ কর্মজীবী কাজ হারিয়েছেন। আর ব্র্যাক বলছে, দুই হাজার ৩১৭ জনের মধ্যে কর্মহীন হয়ে পড়েছে ২০ দশমিক ৭২ শতাংশ।
বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জরিপে উঠে এসেছে সাধারণ ছুটি আর লকডাউনে দেড় কোটির বেশি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। কর্মহীন এসব মানুষের পক্ষে করোনা পরবর্তীতে টিকে থাকা অনেকটা কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।