একাত্তরের পর এতো ভালোবাসা পেলাম: ডা. জাফরুল্লাহ
ঢাকা: সম্প্রতি নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সারা দেশে দল-মত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের দোয়া ও আরোগ্য কামনায় আবেগাপ্লুত হয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান ট্রাস্টি ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘আপনারা যে আমার জন্য এত জনে দোয়া করেছেন, তা অকল্পনীয়। মানুষ যে আমাকে এত ভালোবাসতে পারে, একাত্তরে সেই ভালোবাস পেয়েছিলাম, একাত্তরের পর এবার মানুষের এত ভালোবাসা পেলাম।’
সরকার অন্ধকার ঘরে কালো বিড়াল খুঁজে বেড়াচ্ছে মন্তব্য করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী তিনি বলেন, ‘করোনা সমস্যাটা কিভাবে সমাধান করবে, সেটা সরকারের চিন্তার মধ্যে নাই।’
বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) করোনা থেকে রোগমুক্তি পাওয়ার পর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘করোনা মোকাবিলায় সরকারের কোনও চিন্তাভাবনা নেই। সরকার একটি অন্ধকার ঘরে কালো বিড়াল খুঁজে বেড়াচ্ছে। এখনো মূল প্রবাহ আসেনি। আসবে এ মাসের পরে। যখন গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে পড়বে।’
তিনি বলেন, ‘জাতীয় ওষুধ নীতির নিয়ম বদলালে ওষুধের দাম অর্ধেক হবে। এজন্য ‘সুস্থ স্বাস্থ্যব্যবস্থা’ দরকার। এটা জনগণের দাবি উঠানো ছাড়া সম্ভব না। এর পরিবর্তনের জন্য জনগণের পক্ষ থেকে আওয়াজ আসতে হবে।’
আলোচনার শুরুতে সঞ্চালক বলেন, ‘আপনাদের সাথে সরাসরি কথা বলতে ডা. জাফরুল্লাহর একটু সমস্যা হবে। যতটা কম কথা বলা যায়, সেটাই হলো মূল লক্ষ্য।’
আলোচনা সভায় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মামুন মোস্তাফি বলেন, ‘জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনা নেগেটিভ হলেও বুকের ৮০% নিমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। গ্রামের একজন মানুষ ও কৃষক যে সেবা নিতে পারেন না তিনি তা গ্রহণ করেন না। ওনার করোনা বিজয়ী হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় হলো তার মনবোল। আমরা ঢাকা মেডিকেলে তার জন্য কেবিন রেডি করেছিলাম। কিন্তু সে বলে দিয়েছেন ওখানে থেকে আমার গ্রামের একজন মানুষ চিকিৎসা নিতে পারবে না, আমিও নিবো না। গ্রামের কোন মানুষের এখানে থেকে মৃত্যু হলে আমারও হবে।’
তিনি বলেন, ‘ডা. জাফরুল্লাহ আমার ৩৫ বছরের চিকিৎসা জীবনে সবচেয়ে ডিফিকাল্ট পেসেন্ট। আমি তাঁর চিকিৎসা করার সুযোগ পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেছি। ডায়লোসিস রোগীদের করোনা হলে চিকিৎসা দেয়ার মতো হসপিটাল বাংলাদেশে নেই। তবে এখানে বড় ভাই ডায়লোসিস রোগীদের করোনা চিকিৎসার জন্য আইসিইউসহ সম্পূর্ণ সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন একটি ইউনিট তৈরি করেছেন।’
ডা. মোস্তাফি বলেন, ‘বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের সাথে তার যে একাত্মবোধ তা আমি আর কারও মাঝে দেখিনি। তার প্রতি দেশের মানুষের যে ভালোবাসা ছিলো তা সোস্যাল মিডিয়াতে ঢুকলে দেখা যায়। প্রতিটা মানুষের দোয়া ছিলো- ‘আল্লাহ তুমি এই মানুষটাকে বাঁচিয়ে রাখো’।’
এসময় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাও উপস্থিত ছিলেন।