গুলশান বনানী চোষে বেড়াচ্ছে বিএনপি নেতা মাদারী মিজান! মাসে চাঁদা আদায় ১৫ লক্ষ টাকা!

সময়: 1:09 pm - December 3, 2024 | | পঠিত হয়েছে: 249 বার

সুমাইয়া আক্তার ও সাব্বির হোসেন –

গুলশান বনানী ও মহাখালী চোষে বেড়াচ্ছেন বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিজান ওরফে মাদারী মিজান। তিনি বনানী থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত যুগ্ম আহ্বায়ক। ৫ আগস্ট আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর অজ্ঞাত মিজান জ্ঞাত হয়। এলাকার বিভিন্ন ধান্দা ফিকিরে নিজেকে যুক্ত করেন। বনানী এলাকাজুড়ে গড়ে তুলেছেন মাদারী মিজান সিন্ডিকেট।

সূত্র থেকে জানা যায়, কড়াইল বেলতলা বস্তি এলাকা থেকে প্রতি মাসে মিজান তিন লক্ষ টাকা তুলেন। এ কাজে সাহায্য করেন বেলতলা বস্তি ইউনিটের বিএনপি নেতা কুরুম। এই বিষয়ে কুরুমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এসব কিছু মিজান ভাই দেখা শোনা করেন। কথা বললে তার সাথে গিয়ে বলতে হবে।

বনানী এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্পা সেন্টার, মদের বার ও রাস্তার পার্কিং সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে মিজান মাসোহারা তুলছেন। এছাড়া সম্প্রতি এক কড়াইলের এক ভাঙ্গারীর ব্যবসায়ীর একটি ঝামেলা সমাধান করে তার কাছ থেকে জোর করে ২ লক্ষ টাকা নেন এই মাদারী মিজান। বনানী এলাকায় বসবাসরত একাধিক ব্যক্তি জানায়, মিজান দীর্ঘদিন ধরে এলাকা ছাড়া ছিল। তবে ৫ আগস্টের পর তিনি আবার সরব হন।

অভিযোগ আছে মিজান, সম্প্রতি আওয়ামীলীগের বেশ কিছু নেতাকর্মী ও যুব মহিলালীগের কয়েকজন নেত্রীকে কড়াইলের মোশাররফ বাজার বস্তিতে প্রবেশ করিয়ে অবৈধ্য পানি, বিদুৎ, গ্যাসের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে। এছাড়া মিজান এসব এলাকার ধরণের অবৈধ্য ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের জন্য নিজের লোগ নিয়োজিত করেছে। এসব লোক এক সময় আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিল বলে জানা গেছে।

অভিযোগ আছে মিজানের এসব অপকর্মে সহযোগিতা করেন, বনানী থানার বিএনপির এক ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব, ২০ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান আক্তার, বনানী থানা বিএনপির যুগ্ম আহবায় কুরুম, যুবদল নেতা মফিজুর রহমান মফিজ, সাবেক যুবলীগ নেতা ও বর্তমান নামধারী যুবদল নেতা জামাল, টিএন্ডটি এলাকার যুবদল নেতা সাঈদ হোসেন, কবির, বড়াই থানা যুবদলের মনির খান, ও সদস্য সচিব হাসিবুর রহমান মীমসহ বিএনপিও অঙ্গ সংগঠনের বেশ কিছু নেতাকর্মীরা চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। অভিযুক্ত এসব ব্যক্তির বিষয়ে খোঁজ খবর নিলে বেশ কিছু তথ্য প্রমাণ ও পাওয়া গেছে।

মিজানুর রহমান মিজান গুলসান বনানী এলাকা থেকে ৫ আগস্ট এর পর প্রতি মাসে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা তোলেন। যদি কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে সেখানে যুবদল নেতা মনির খান ও মিম সেখানে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেন। এবং তাদের অসৎ উদ্দ্যেশ্য বাস্তাবায়ন করেন।

অভিযোগ আছে, বিএনপি বিরোধী দল থাকা অবস্থায় মিজান কখনোই রাজনীতিতে সবার ছিল না। গ্রুপিং এবং লবিং রাজনীতির কারণে মিজান এখানে বিএনপির নেতা হয়েছেন। সম্প্রতি মিজান বনানী থানার টিএন্ডটি এলাকার যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী শারমিন আক্তার তাসলির নিকট থেকে প্রথমে ৫ লক্ষ টাকার বিনিময় এলাকায় প্রবেশ করিয়েছেন। মিজান সিন্ডিকেটের সদস্যরা তাসলিকে বর্তমান প্রটেকশন দেন। যুবমহিলালীগের বনানী থানার সভানেত্রী আলোচিত তাসলিমা ৫ আগষ্টে ছাত্রদের ওপর হামলাসহ বিভিন্ন নৈরাজ্য করেছে।

অভিযোগ আছে তাসলির কাছ থেকে মোট মিজান ২০ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। তাসলিমা বিগত সরকারের আমলে মহাখালী এলাকায় ব্যাপক নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছিল। সাধারণ মানুষকে উৎখাত-ঘরবাড়ি দখলে জড়িত ছিল। এমনকি খুন সন্ত্রাসী কার্যক্রম সহ বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত ছিল এই তাসলিমা। তাসলিমা এখন মিজানের ছত্রছায়ায় যুব মহিলা লীগ থেকে যুব মহিলা দলের নেত্রী হিসেবে পরিচয় দেন। অথচ তিনি এর আগে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের তিন কমিটির নেত্রী ছিলেন।

স্থানীয় বিএনপির অভিযোগ, মিজানের এমন নৈরাজ্য কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তাদের দাবি তার বিরদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে মিজানুর রহমান মিজান ওরফে মাদারে মিজান এক সাংবাদিককে বলেছেন, আপনারা যে সব অভিযোগ শুনেছেন সেগুলো সঠিক নয়। বরং আমি এসবের বিরুদ্ধে হওয়ায় অনেকেই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও অপ্রচার করছে।

ভোরের পাতা/আইভি

এই বিভাগের আরও খবর