তালেবানদের সাহায্য করা দরকার: জাফরুল্লাহ চৌধুরী
ঢাকা: আফগানিস্তানে মার্কিনপন্থী সরকার হটিয়ে দেশটির নিয়ন্ত্রন নেয়া তালেবানদের দ্রুত সমর্থন দেওয়া ও সাহায্য করা প্রয়োজন বলে মনে করেন গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে যে কোনো মুক্তির আন্দোলনকে সমর্থন দিতেন। এটা মনে রাখতে হবে যে তালেবানরাও মুক্তিযোদ্ধা। বিদেশি শক্তির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করেছে। তারা যাতে কট্টরবাদী, ইসলামের নামে ধর্মান্ধ না করে তার জন্য দ্রুতই তাদের সমর্থন ও সাহায্য করা প্রয়োজন।
আজ বুধবার (১৮ আগস্ট) বেলা ১২টায় রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় নাগরিক সমাজের উদ্যোগে “করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জনগণের চলাচল সচেতন করা ও মাস্ক বিতরণ’’ অনুষ্ঠানের শুরুর আগে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সবাইকে মাস্ক পড়তে হবে। মাস্ক আমাকে রক্ষা করে অন্যকেও রক্ষা করে। কাপড়ের মাস্ক হওয়া বাঞ্ছনীয়। নয়ত পরিবেশ নষ্ট করে।
সরকার প্রধানকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, রাশিয়া ভ্যাকসিনের দাম সবচেয়ে কম হওয়ার পরও কেন কিনছে না, তার জবাবদিহিতা নাই। সরকার একের পর এক ভুল করে চলছে; গণতান্ত্রিক সরকার না হলে যা হয়।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেন। আর ধানাইপানাই কইরেন না। আন্দোলনকে ভয় পাচ্ছেন কেন। যখন আন্দোলন হবে তো হবেই। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে দেশের সর্বনাশ ডেকে আনবেন না।
অনুষ্ঠানে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জনজীবন সচল রাখার আহ্বান জানান গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
এসময় সরকারের কাছে তিন দফা দাবি উত্থাপন করে তিনি।
১. শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের অবিলম্বে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। দ্রুত সময়ে টিকা সংগ্রহ ও দেশের ১৩ কোটি মানুষের টিকা দেয়ার রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। টিকা ক্রয়ে দামের স্বচ্ছতা থাকতে হবে। অবিলম্বে দেশে টিকা উৎপাদনের উদ্যোগ নিতে হবে।
সবার জন্য স্বাস্থ্য সেবা সুরক্ষা ও প্রয়োজনে স্বাস্থ্য তহবিল ঘোষণা করতে হবে। স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কলকারখানা খুলে দিতে হবে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের মানবেতর জীবন যাপনের অবসান ঘটে হবে।
২. লকডাউন ও নানা কারণে আড়াই কোটি নিন্ম আয়ের পরিবার অর্থাৎ ১০ কোটি মানুষ জীবিকা বিপর্যয়ের মধ্যে আছেন, আর্থিক সংকটে আছেন। কাজেই আড়াই কোটি নিম্ন আয়ের পরিবারের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যবস্থা করতে হবে। সারা দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম, ওষুধের দাম, বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার যে ব্যয় তা নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
৩. সরকার লকডাউন দেয়, কিন্তু বাস্তবে লকডাউন হয় না। ফলে একদিকে অর্থনীতির ক্ষতি হয় অন্যদিকে করোনা বেড়ে চলে। আমাদের কথা হচ্ছে সকলকে আমরা স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করবো।
বক্তব্য শেষে ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নেতৃত্বে নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ ফার্মগেট হতে তেজগাঁও রেলগেট রাস্তায় পথচারীদের মাঝে মাস্ক ভিতরণ করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের গণমাধ্যম উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, নাট্য পরিচালক শেখ রুনা, ছাত্র নেতা ইসমাইল হোসেন সম্রাটসহ প্রমূখ।