ই বন্ধ এই খোলা এই ছুটির তামাশায় করোনায় করুণ পরিস্থিতি: রিজভী
ঢাকা: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত, গার্মেন্টস-কলকারখানা নিয়ে সরকারের ‘এই বন্ধ এই খোলা এই ছুটির তামাশায়’ দেশে করোনা ভাইরাসের করুণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারির মধ্যেও সরকার মানুষকে হেনস্তা করছে। এই বলছে গার্মেন্টস বন্ধ আবার বলছে খোলা। সরকারের এই ‘বন্ধ, ছুটি, খোলার তামাশায়’ ঢাকায় করোনা আক্রান্ত বেশি। মানুষ মারা যাচ্ছে। লাশের সারি দীর্ঘ হচ্ছে। হু হু করে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগী। সরকারের অপরিণামদর্শিতা ও দক্ষতার অভাবে করুণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।’
দেশে উৎপাদন ও উন্নতির জায়গা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সৃষ্টি করে গেছেন বলে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘ভোটারবিহীন বর্তমান অবৈধ সরকারের জনগণের কাছে কোনও জবাবদিহিতা নেই। একারণেরই সরকার যা ইচ্ছা তাই করে যাচ্ছে।’
শনিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহবুবুল ইসলাম স্বপনের উদ্যোগে অসহায়-দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণের সময় তিনি এসব কথা বলেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে এ খাবার বিতরণের আয়োজন করা হয়। এসময় স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের কীর্তি ও কর্মকাণ্ড বলে শেষ করা যাবে না। তাঁর নিজের ও পরিবারের জন্য কোনও চিন্তা ছিল না। চিন্তা ছিল কিভাবে মানুষের এবং দেশের উন্নয়ন করা যায়। দেশকে একটি আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্রে পরিণত করা, কিভাবে খাদ্য উৎপাদন বাড়বে, খাল কেটে মৎস্য চাষ এবং শুকনো মৌসুমে কৃষিকাজের ব্যবস্থা কীভাবে করা যায়- এগুলো ছিল তার মাথায়। অল্প সময়ের রাষ্ট্র পরিচালনার মধ্যে এমন কোনও জায়গা নেই যে জিয়াউর রহমানের অবদান নেই। উৎপাদন ও উন্নতির জায়গা তিনি সৃষ্টি করেছেন। একটি জাতি কীভাবে আত্মনির্ভরশীল করা যায় তা তিনি দেখিয়েছেন। গোটা দেশের মানুষকে তিনি কর্মী বানিয়েছিলেন, দেশ গঠনের জন্য।’
রিজভী বলেন, ‘স্বাধীনতার পরে দেশে ছিল দুর্ভিক্ষ, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও লুটতরাজ। ওইখান থেকে জিয়াউর রহমান দেশের মানুষকে স্বস্তি দিয়েছিলেন। দেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে স্বনির্ভর করেছিলেন। তখন মানুষের মধ্যে একটা কথা ছিল, মানুষ দরজা খুলে রেখে ঘুমাতে পারতো। একজন সুশাসক ক্ষমতায় থাকলে এমনটা পারা যায়। জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। আর আওয়ামী লীগ ৭২ সালে সবকিছু বন্ধ করে দিয়ে গণতন্ত্র হত্যা করেছিলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার ৫০ লক্ষ লোককে আড়াই হাজার টাকা করে দিয়েছে। সেখান থেকে আওয়ামী লীগের নেতারাও ৫০০ টাকা করে রেখে দিয়েছে। সরকার যে টাকা দিচ্ছে এই টাকা জনগণের। এর আগে আওয়ামী লীগের লোকেরা ত্রাণের চাল, ডাল, তেল চুরি করছে। আওয়ামী লীগের লোকেরা সব জায়গা থেকে মারিং কাটিং করছে।’
বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘বাজেট পাস হওয়ার আগেই প্রতিটি মোবাইল থেকে টাকা কাটা হচ্ছে। বাজেট পাস হয়নি শুধু প্রস্তাব করা হয়েছে। এরমধ্যে টাকা কাটা শুরু হয়ে গেছে। অর্থাৎ জনগণের কাছে সরকারের জবাবদিহি নাই বলে যা ইচ্ছে তাই করছে।’
ত্রাণ বিতরণের সময় রিজভী বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মত শাসক থাকলে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে করোনা সংক্রমণের এরকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। সর্বশক্তি দিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতো বিএনপি। মানুষকে না খেয়ে থাকতে হতো না। ভিয়েতনাম, ভুটানসহ অনেক দেশ করোনা মোকাবিলায় সক্ষম হয়েছে। আর আমাদের দেশে মানুষের মধ্যে বেশি করে ছড়িয়ে পড়তে সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া হয়েছে। এই সরকারের অপরিপক্কতা মানুষের জীবন নিয়ে খামখেয়ালিপনায় করোনা দুর্যোগের মধ্যে আমরা অবস্থান করছি।’