নিজ থেকে শ্বাস নিতে পারছেন না নাসিম
ঢাকা: সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম নিজ থেকে শ্বাস নিতে পারছেন না এবং চিকিৎসকদের কোনো প্রতিক্রিয়াতেই সাড়া দিচ্ছেন না।
মোহাম্মদ নাসিমের চিকিৎসায় গঠিত ১৩ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এসব তথ্য জানান।
ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, ‘মোহাম্মদ নাসিমের হৃদযন্ত্র এখনো সক্রিয়। তবে রক্তচাপ উঠা-নামা করছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘মানুষ সাধারণত মিনিটে ১৮ থেকে ২০ বার নিঃশ্বাস নেয়। কিন্তু মোহাম্মদ নাসিম নিজ থেকে কোনো শ্বাসই নিতে পারছেন না। আমরা লাইফ সাপোর্টের মাধ্যমে তার শ্বাস-প্রশ্বাস সচল রেখেছি।’
‘মোহাম্মদ নাসিমের শরীরের কোনো সাড়া নেই। চিকিৎসকরা তার শরীরে চিমটি কেটে দেখেছেন, তাতেও তিনি সাড়া দিচ্ছেন না। গত পাঁচ দিন ধরে ডিপ কোমায় আছেন তিনি’, যোগ করেন অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর শ্যামলীর এ বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভেন্টিলেশনে আছেন মোহাম্মদ নাসিম। চিকিৎসকেরা পরবর্তী পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত এ অবস্থাতেই তার চিকিৎসা চলবে। এর আগে গতকাল রাতে বৈঠক করেছেন তার মেডিকেল বোর্ডের ৭ চিকিৎসক। কিছু ওষুধ পরিবর্তন করে দিয়েছেন।
এর আগে রক্তচাপজনিত সমস্যা নিয়ে গত ১ জুন হাসপাতালে ভর্তি হন মোহাম্মদ নাসিম। ওই দিনই তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর ৪ জুন তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও ৫ জুন ভোরে তিনি স্ট্রোক করেন। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত সমস্যার কারণে দ্রুত অস্ত্রোপচার করে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়।
এরপর গত শনিবার মোহাম্মদ নাসিমের চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়ার নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।
প্রাথমিকভাবে মোহাম্মদ নাসিমকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত দেয় মেডিকেল বোর্ড। তবে ৭২ ঘণ্টা শেষে গতকাল আর ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা।
মোহাম্মদ নাসিম বর্তমান সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি। তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের মুখপাত্রও তিনি।
২০১৪ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান মোহাম্মদ নাসিম। এর আগে ১৯৯৬-২০০১ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের সময় একাধিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।