‘দুর্নীতি ও লুটপাটই হচ্ছে ওবায়দুল কাদেরের কাছে পূর্ণিমার আলো’

সময়: 10:54 am - July 7, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 63 বার
‘দুর্নীতি ও লুটপাটই হচ্ছে ওবায়দুল কাদেরের কাছে পূর্ণিমার আলো’

ঢাকা: দুর্নীতি ও লুটপাটই ওবায়দুল কাদের সাহেবদের কাছে পূর্ণিমার আলো বলে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, তাদের ব্যর্থতার সমালোচনা শুনলেই সেটিকে তারা অন্ধকার বলে মনে করছে। আজ মঙ্গলবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয কার্যালয়ে এক ভিডিও সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক- ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন ‘করোনার এই সংকটেও আজগুবী তথ্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে বিএনপি। পূর্নিমার রাতেও বিএনপি অমবস্যার অন্ধকার দেখতে পায়’। বিএনপি জাতিকে বিভ্রান্ত করছে না বরং জাতির সামনে প্রতিনিয়ত সঠিক তথ্য তুলে ধরছে বিএনপি। নিষ্কর্মার ঢেঁকি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অযোগ্যতা ও তার আত্মীয়স্বজন এবং ক্ষমতাসীনদের সিন্ডিকেটের দুর্নীতির কারণে স্বাস্থ্যসেক্টর ভেঙ্গে পড়েছে। করোনাসহ কোন রোগেরই চিকিৎসা পাচ্ছে না মানুষ। করোনার টেষ্ট না করিয়েই দেয়া হচ্ছে করোনার রিপোর্ট। বিনা চিকিৎসায় পথে ঘাটে মারা যাচ্ছে মানুষ। কবরস্থানে লাশ দাফনের জায়গা নেই। এখনো সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসায় ১০০ টাকার মধ্যে ব্যক্তির পকেট থেকে ব্যায় হয় ৬৬ টাকা। আর বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গেলে তো ঘটি-বাটি, সহায়-সম্পদ সব খোয়াতে হয়। সরকার চিকিৎসার মতো মানুষের একটি মৌলিক অধিকারকে অগ্রাহ্য করে মেগা প্রজেক্ট নিয়েই ব্যাস্ত আছে। মানুষের জীবন মরণের প্রশ্নটি সরকারের কাছে কোনো মুল্য নেই। যারা জনগণের ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে তারা জনগণের মৌলিক চাহিদাগুলোকে কখনই আমলে নিবে না। তারা কালাকানুন দিয়েই জনগণকে বন্দী রেখে এক মনুষত্যহীন কর্তৃত্ববাদী শাসনকে টিকিয়ে রাখতে চাইবে। অভাবের তাড়নায় লাইন ধরে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ, ধারদেনা করে কোনরকমে জীবন যাপন করছে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের মানুষরা। ব্যাংকগুলো লুট করে খালি করে দেয়া হয়েছে। এবারের কাল্পনিক বাজেটেও সরকারের টার্গেট হচ্ছে ব্যাংক থেকে ব্যাপক পরিমানে ঋন নেয়। এই ঋণ জনকল্যাণের কাজে ব্যবহৃত হবে না, এই ঋণ মেগা প্রজেক্টের নামে লুটপাটেই শেষ হয়ে যাবে। আকন্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত সকল সেক্টর। প্রতিদিন এসব খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হচ্ছে। দুর্নীতি ও লুটপাটই হচ্ছে ওবায়দুল কাদের সাহেবদের কাছে পূর্ণিমার আলো। তাই তাদের ব্যর্থতার সমালোচনা শুনলেই সেটিকে তারা অন্ধকার বলে মনে করছে।

তিনি বলেন, করোনাকালে সরকার গণমাধ্যমের গলায় ফাঁস পরিয়ে রাখলেও তারপরেও যতোটুকু সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে তাতে সরকারি দলের লোকদের দুর্নীতির কাহিনী শুনলে গা শিওরে ওঠে। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সাথে চুক্তিবদ্ধ আওয়ামীলীগ নেতার রিজেন্ট হাসপাতালে করোনার সঠিক পরীক্ষা না করে হাজার হাজার মানুষদের দেয়া হয়েছে করোনার পরীক্ষার ভুল রিপোর্ট। যার পজেটিভ তাকে দেয়া হয়েছে নেগেটিভ আর যার নেগেটিভ তাকে দেয়া হয়েছে পজেটিভ রিপোর্ট। এইভাবে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ঐ হাসপাতালটি। এতে কতো মানুষের জীবন নিয়ে সর্বনাশা খেলা করা হয়েছে, তা বলে শেষ করা যাবে না। আমরা বার বার বলেছি এই করোনা কালে মানুষ বাঁচাতে সরকারের কোনো পদক্ষেপ নেই। মানুষের দূর্যোগেও মহাদুর্নীতি থেকে বের হতে পারেনি আওয়ামীলীগের নেতারা। হাসপাতালে নিম্নতম চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। তারপরেও এই করোনা টেষ্টের নামে ক্ষমতাসীন দলের লোকজোনরা মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলবেন অথচ এ বিষয়ে সমালোচনা করা যাবে না- এটাই ভয়াঙ্কর কর্তৃত্ববাদী শাসনের চূড়ান্ত বহি:প্রকাশ। ওবায়দুল কাদের সাহেবরা ছাদের নিচে ঘরের ভেতরে বসে ভার্চুয়াল বক্তব্য রাখছেন তাতে তো আসল পূর্নিমার চাঁদ না দেখারই কথা। কিন্তু বাহিরে দেশজুড়ে যে মানুষের মনে অমাবস্যার ঘন অন্ধকার বিরাজ করছে সেটা তিনি টের পাচ্ছেন না। আর টের পেলেও নেতৃত্ব ও মন্ত্রীত্ব রক্ষার জন্য উদ্ভট, অবান্তর ও উটকো কথা তাকে বলতেই হবে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এখন করোনার নমুনা পরীক্ষাও নিয়ন্ত্রন করা হচ্ছে। করোনার এই উচ্চ সংক্রমনের সময়ও কেন করোনা পরীক্ষা কমে গেল তার কি কোন উত্তর দিতে পারবেন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক। কয়েকদিন আগে ১৫-১৬ হাজার জনের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছিল। এখন তা ১১-১২ হাজারে নেমে এসেছে, প্রায় ৪-৫ হাজার কমে গেছে। এর অর্থ সরকার জবরদোস্তিমূলকভাবে করোনার সংক্রমণ কম এটি জনগণকে দেখানোর জন্য করোনার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রন করছে। আওয়ামী লীগের মনস্তত্বে যেটি নেই তা হলো সততা, মর্যাদা, যোগ্যতা, সহানুভূতী, প্রাসংঙ্গিক অভিজ্ঞতা ও পরিকল্পনার সক্ষমতা। নিজেদের সর্ম্পকে উচ্চকিত ধারণা, চরম মিথ্যাচার, অনুশোচনাহীনতা, অগভীরতা, বিনা নির্বাচনে প্যারাসাইটের মতো ক্ষমতা আকড়ে রাখা, নিজের কাজের দায়িত্ব নিতে অপারগতা কিন্তু বাগড়াম্বরে অদ্বিতীয় আওয়ামীলীগ একটি আত্মপ্রেমজনিত বৈকল্য ভোগে। আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, যতোই একক কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রকোপ বৃদ্ধি, গণতন্ত্র হরণ আর বিরোধী মত নিধন করেন না কেন- জনগণের অধিকারের পক্ষে আমাদের উচ্চারণ থামবে না।

এই বিভাগের আরও খবর